কৃষি প্রতিক্ষণ মুন্সিগঞ্জঃ আলুর রাজধানী খ্যাত মুন্সিগঞ্জের চারদিকে কৃষকেরা এখন ব্যস্ত আলু ফসল নিয়ে। আলু গাছের সবুজ পাতায় ছেয়ে গেছে মুন্সিগঞ্জের প্রান্তর। কৃষকরা জানালেন, অগ্রহায়ণে শুরু হয়েছে চাষ। আর ফসল ঘরে উঠবে ফাল্গুনে। মুন্সিগঞ্জে আলুর উৎপাদন বেশি। এটা এ জেলার ঐতিহ্য। এখানকার মাটি ভালো বলে আলুর স্বাদও ভালো।’
মুন্সিগঞ্জের মধ্যে সিরাজদিখান উপজেলার তাজপুর মাঠে বড় আয়তনে আলুর চাষ হয়। ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সেখানে আলুর চাষ হচ্ছে। সিরাজদিখান উপজেলার তাজপুরে দেখা গেল, শ্রমিকেরা খেতের ঘাস তুলে ফেলছেন। পানি ছিটাচ্ছেন। ওষুধ স্প্রে করছেন।
মুন্সিগঞ্জ জেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, আলুর চাষের ইতিহাস বলতে গেলে মুন্সিগঞ্জের নাম আসবে। আসবে সিরাজদিখানের তাজপুরের নাম। তাঁর ভাষ্য, মুন্সিগঞ্জে ডায়মন্ড প্রজাতির আলুর চাষ বেশি হয়। শতকরা ৯৫ ভাগ জমিতে এই প্রজাতির আলুর চাষ করেন চাষিরা। এ ছাড়া অ্যাসপেরিক, ক্যারেজ, পেট্রোলিজ, কার্ডিনাল, মুল্টা ও লেডিরোসেটা প্রজাতির আলুর চাষ হয়।
কয়েকজন আলু ব্যবসায়ী বলছিলেন, ‘আলুর ফলন যদি ভালো হয়, তাহলে আলু চাষের মতো লাভজনক আর কোনো কৃষি নেই। আর যদি ফলন খারাপ হয়, তাহলে চাষি একদম মাঠে মারা যান। তবে এবার শীত কম থাকায় চাষিরা ভয়ে আছেন। তাঁদের ভাষ্য, তাপমাত্রা বেড়ে গেলে আলুর খেতে পোকার আক্রমণ বেড়ে যাবে। এবার শীত কম। যেকোনো মুহূর্তে আলুর মড়ক দেখা দিতে পারে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হুমায়ুন কবির বলেছেন, এখন পর্যন্ত যে আবহাওয়া তাতে চিন্তার কিছু নেই। ফলনও খারাপ হওয়ার কথা নয়। তবে যদি শীত কম থাকে তাহলে সত্যি সত্যি পোকার আক্রমণ বেড়ে যাবে; যা মহামারি আকার ধারণ করতে পারে। আবহাওয়ার ওপর আলুর ফলন নির্ভর করে। বেশি তাপমাত্রা আলু চাষের জন্য হুমকি। জানুয়ারির মাঝামাঝি শীত ছিল বেশি। কিন্তু এখন একদম কম।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, চলতি বছর মুন্সিগঞ্জে ৩৯ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। গত বছর ৩৮ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়। তাতে উৎপন্ন হয়েছে ১৩ লাখ ৫০ টন।
কৃপ্র/এম ইসলাম