কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ ভোলা জেলার মাঝের চরের বিস্তীর্ণ জমিতে বাড়ছে ক্যাপসিকাম চাষ। কম খরচে বেশি লাভ ও গত দুই বছরের পরীক্ষামূলক চাষে সফলতা পাওয়ায় ফসলটি আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। মাঝের চর ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের অন্তর্গত। মেঘনার কোলে জেগে ওঠা এ চরের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ মত্স্য আহরণ ও কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। এ চরের মাটি ও আবহাওয়া উত্কৃষ্ট মানের ক্যাপসিকাম আবাদের জন্য বেশ উপযোগী। তাই গত দুই বছর এখানে পরীক্ষামূলকভাবে ক্যাপসিকাম চাষ করা হয়। প্রথম বছরে পাঁচ হেক্টর জমিতে আশানুরূপ ফলন না হলেও চাষীদের লোকসান গুনতে হয়নি। আর পরের বছর একই পরিমাণ জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করে দারুণ সফল হন তারা। প্রতি হেক্টরে তারা ৩০ টন ফলন পান।
কৃষকরা বলছেন, স্বল্প খরচে ক্যাপসিকাম চাষে অধিক মুনাফা অর্জন করা সম্ভব। তাছাড়া এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া এর উপযোগী। গত বছর পাঁচ হেক্টর জমির ক্যাপসিকাম থেকে তারা দু-তিন গুণ মুনাফা অর্জন করেন। ফলে এ বছর তারা চরের ২৫ হেক্টর জমিতে ফসলটির আবাদ করেছেন।
চরের এক কৃষক ওমর ফারুক বলেন, গত বছর যৌথভাবে চাষ করে ভালো ফলন পাওয়ায় এ বছর নিজেই এক একর জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করেছি। ফলনও ভালো দেখা যাচ্ছে। বাজারমূল্য ভালো থাকলে গত বছরের তুলনায় লাভ বেশি হবে। কৃষকরা আরো জানান, স্থানীয় বাজারে ক্যাপসিকামের চাহিদা না থাকলেও ঢাকায় দারুণ চাহিদা রয়েছে। বড় আকৃতির অর্থাত্ এ গ্রেডের কেজিপ্রতি ক্যাপসিকাম ৬০-১০০ টাকা ও বি গ্রেড প্রতি কেজি ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হয়।
তবে জেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা না থাকায় এখনো এটি চাষে তাদের কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। তাছাড়া ক্যাপসিকামের বীজ সহজলভ্য না হওয়ায় কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে চাষীদের। মো. ফারুক নামে এক কৃষক বলেন, ‘এ অঞ্চলের প্রত্যেক চাষীই ওমান থেকে বীজ সংগ্রহ করে ক্যাপসিকাম আবাদ করেন। এতে তাদের খরচের পরিমাণ বেশ বেড়ে যায়।’ প্রতি কেজি বীজ কিনতে তাদের ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা গুনতে হয় বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ‘ভোলা নদীবেষ্টিত হওয়ায় এখানকার অধিকাংশ ফসলি জমিতে যেতে নদী পাড়ি দিতে হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থার এ সংকটের কারণে কৃষকদের সবসময় সহযোগিতা করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবুও চাষীদের যেকোনো সমস্যায় তাদের সহযোগিতা করা হবে।’
সুত্রঃ বনিক বার্তা / কৃপ্র/এম ইসলাম