কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাত ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় চলছে বিভিন্ন জাতের আলুর চাষাবাদ। তবে উৎপাদিত আলু ও বীজ সংরক্ষণের জন্য কোন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছর কৃষকদের নতুন বীজ ক্রয় করে চাষাবাদ করতে হচ্ছে। ফলে চরম দুর্ভোগে রয়েছে উপজেলার সহস্রাধিক কৃষক। উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় হীরা জাতের আলু চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। ফলে এবারও অন্যান্য বছরের মতো শত শত হেক্টর জমি জুড়ে হীরা আলুর পাশাপাশি ডায়মন্ড, কার্ডিনাল, ভিত্ত্ব ও বীজের জন্য বাসক জাতের আলুর চাষ করা হয়েছে। জানা গেছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গত বছরের তুলনায় এবার আলু চাষ অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে এবার কৃষকদের লাভবান হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে এ উপজেলার জল্লা, হারতা, সাতলা, বামরাইল, গুঠিয়া, শোলক ও শিকারপুর ইউনিয়নের মোট ৩৭৪ হেক্টর জমিতে প্রায় ১ হাজার ৩শ’ কৃষক আলুর আবাদ করছেন।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জল্লা ইউনিয়নে ২৩০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষাবাদ হয়েছে। হারতা, জল্লা ও সাতলা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি আবাদকৃত জমি সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, যে সকল জমিতে বর্তমানে আলু চাষ করা হচ্ছে ওই জমিগুলোর আলু তোলার পর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে কৃষকরা সেসব জমিতে পাট, তিলসহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করবেন। আর বর্ষার মৌসুমে ফসলী জমিগুলো পানিতে পরিপূর্ণ থাকায় বিভিন্ন ধরনের মাছের চাষ করা হয়। ফলে ওই অঞ্চলের জলাবদ্ধ এক ফসলী জমিতে এখন বহুবিধ ফসল আবাদ করে কৃষকরা সাবলম্ভী হচ্ছেন।
জল্লা ইউনিয়নের কারফা গ্রামের আদর্শ কৃষক সমীর বিশ্বাস জানান, তিনি বহু বছর থেকে বিভিন্ন জাতের আলু চাষ করে আসছেন। এবারও তিনি ৫০ শতক জমিতে আলুর চাষ করছেন। তিনি আরও জানান, এ চাষাবাদে অল্প পুঁজিতে বেশি লাভবান হওয়ায় কৃষকরা আলু চাষের প্রতি আরও উৎসাহিত হচ্ছেন। ফলে গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর অধিক জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। কিন্তু উৎপাদিত আলু ও বীজ সংরক্ষণে উপজেলায় কোন হিমাগার না থাকায় প্রতি বছরই তাদের নতুন বীজ ক্রয় করে চাষাবাদ করতে হয়।
এলাকার সফল কৃষক প্রকাশ রায় জানান, বীজের কোন প্রকার রোগ বালাই পচা ও ছত্রাক ধরার সম্ভাবনা নেই। কারণ আলু আবাদকৃত জমিতে ১০ থেকে ১৫ দিন পরপর ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করা হয়। তবে আবহাওয়া ভালও থাকলে গত বছরের তুলনায় এবার বেশি ফসল লাভের আশা রয়েছে। প্রতি মৌসুমে তার খরচ বাদ দিয়ে প্রায় অর্ধ লাখ টাকা লাভ হয়। শুধু উপজেলায় কোন হিমাগার না থাকার কারণে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাইনুল ইসলাম জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর ব্যাপকভাবে আলুর চাষাবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা আশানুরূপ ফসল ঘরে তুলতে পারবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাকির হোসেন তালুকদার জানান, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে আলু চাষাবাদের জন্য বেশ উপযোগী। কিন্তু আলু চাষের ওপর এ উপজেলায় সরকারী প্রকল্প বরাদ্দ এবং উৎপাদিত আলু ও বীজ সংরক্ষণের জন্য কোন হিমাগার না থাকায় কৃষকরা চরম ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
সুত্রঃ জনকণ্ঠ / কৃপ্র/এম ইসলাম