কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ সবজির জন্য খ্যাত চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় শুরু হয়েছে তামাকের অাগ্রাসন। ছদাহা ও বাজালিয়া ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায় এ বছর তামাক চাষ করছেন কিছু চাষি। এর আগে সাতকানিয়ায় তামাক চাষ হয়নি। জানা যায়, উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের পাহাড়ি গ্রাম খোর্দ্দকেঁওচিয়া ও শেষমাথা এবং বাজালিয়া ইউনিয়নের মাহালিয়া এলাকায় অন্তত ১৬ একর জমিতে তামাকের চাষ করা হয়েছে। স্থানীয় ৮ থেকে ১০ জন কৃষক মিলে ওই তামাক চাষ শুরু করেছেন। এসব জমিতে আগে সবজির চাষ হতো।
ছদাহা ইউনিয়নের খোর্দ্দকেঁওচিয়া ও শেষমাথা গ্রামের খণ্ড খণ্ড জমিতে তামাকের চাষ করা হয়েছে। এর পাশেই রয়েছে টমেটো, বেগুন ও শিমখেত। শেষমাথা গ্রামে দেখা যায়, একজন চাষি তামাকখেত পরিচর্যা করছেন। তঁার পাশে টমেটো, বেগুন ও শিম খেতে ফসল তুলছেন অন্য চাষিরা। শেষমাথা গ্রামের তামাকচাষি এজাহার মিয়া (৫০) বলেন, আগে তিনি বিভিন্ন শাকসবজির চাষ করতেন। চলতি বছর শাকসবজির চাষ ছেড়ে প্রায় ১০ কানি জমিতে তামাক চাষ করেছেন।
এজাহার মিয়া আরও বলেন, কার্তিক মাসের শুরুতে সিগারেট কোম্পানির লোকজন এসে তামাক চাষের ব্যাপারে স্থানীয় চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে তাঁরা চাষাবাদের জন্য বীজ, সার ও নগদ টাকা দিয়েছেন। তাই এলাকার কয়েকজন চাষি পরীক্ষামূলকভাবে তামাক চাষ শুরু করেছেন। মাহালিয়া গ্রামের আরেক চাষি মোক্তার আহমদ (৪৮) জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে টমেটো চাষের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এ বছর টমেটোর পাশাপাশি তামাকের চাষও করেছেন।
সবজি চাষে একসঙ্গে মোটা দাগে টাকা পাওয়া যায় না। সিগারেট কোম্পানির লোকজন তামাক পাতা কিনে নিয়ে একসঙ্গে মোটা দাগে টাকা দেবেন, এই আশায় তাঁরা কয়েকজন মিলে তামাক চাষ শুরু করেছেন। এজাহার মিয়া ও মোক্তার আহমদকে তামাক চাষের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানেন কি না জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, ‘আমাদের টাকার দরকার। তারপর অন্য কিছু চিন্তা করব। সরকারিভাবে তামাক চাষের বিষয়ে বিধিনিষেধ থাকলে আমরাও করতাম না।’
ছদাহা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মোসাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘শুনেছি পাহাড়ঘেঁষা কয়েকটি গ্রামে অল্পসংখ্যক চাষি তামাক চাষ করেছেন। তামাক কোম্পানির লোকজন গ্রামের ঘরে ঘরে গিয়ে ওই চাষিদের উৎসাহিত করেছিলেন। প্রশাসনের তদারকি থাকলে তামাক চাষ বন্ধ হয়ে যাবে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শোয়েব মাহমুদ বলেন, সাতকানিয়া উপজেলায় আগে কখনো তামাক চাষের খবর পাওয়া যায়নি। তবে এ বছর কয়েকজন চাষি চাষ শুরু করেছেন। ওই তামাকচাষিদের সঙ্গে কৃষি বিভাগের লোকজন কথা বলবেন। তামাক চাষের ক্ষতিকর বিষয়গুলো চাষিদের জানাবেন। চেষ্টা করবেন ভবিষ্যতে যাতে তামাক চাষে তাঁরা নিরুৎসাহিত হন।
সুত্রঃ প্রথম আলো / কৃপ্র/এম ইসলাম