এসএম মুকুলঃ জাতীয় অর্থনীতিতে শ্রমনিবিড় চাশিল্প খাতটি ব্যাপক অবদান রাখবে এমনটি প্রত্যাশা শিল্পোদ্যোক্তাদের। এই আশা জাগার কারণ স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে চায়ের চাহিদা ও দাম দুটিই বেড়ে চলেছে। দেশের উত্তরাঞ্চল ও পার্বত্য চট্টগ্রামে বিস্তৃত হচ্ছে চায়ের আবাদ। এমনকি চট্টগ্রামের মিরসাইয়ের পাহাড়-টিলাভূমিতেও চা চাষের সম্ভাবনা জেগে উঠেছে।
গত ১০ বছরে দেশের উত্তরাঞ্চল ও পার্বত্য এলাকায় ক্ষুদ্র পরিসরে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে চায়ের বাড়তি আবাদ ও উৎপাদন করা হয়েছে। সেখানে উন্নততর ক্লোন জাতের চায়ের চারাগাছ লাগানো হয়েছে, ফলনও দিচ্ছে ভালো। আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে চা আবাদ ও উৎপাদন প্রক্রিয়ায়। চায়ের প্রধান আবাদক্ষেত্র বৃহত্তর সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে এবার প্রাক-বর্ষা ও বর্ষায় পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত চায়ের ফলন, উৎপাদনে সহায়ক হয়েছে। বর্তমানে দেশে চায়ের প্রায় সোয়া ২ হাজার কোটি টাকার বাজার রয়েছে। এ বছর দেশে সাড়ে ৬ কোটি কেজির কাছাকাছি অর্থাৎ রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদিত হয়েছে।
আশার খবর হলো চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের চেষ্টায় বর্তমানে চায়ের ১৮টি উচ্চফলনশীল ক্লোন, চারটি বায়োক্লোনাল ও একটি পলিক্লোনাল বীজ উদ্ভাবিত হয়েছে; যা অধিক চা উৎপাদনে ভূমিকা রাখছে। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশে উৎপাদিত চা দুই দশক আগেও বিশ্বের ২০-২২টি দেশে রপ্তানি করা হতো। অন্যতম প্রধান ক্রেতাদেশ পাকিস্তান, আফগানিস্তান, যুক্তরাজ্য, সোভিয়েত ইউনিয়ন বা সিআইএসভুক্ত দেশগুলো, মধ্যপ্রাচ্য, পূর্ব ইউরোপের দেশসমূহ, মিসর, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস। তবে বর্তমানে বিশ্বের ১৭টি চা রপ্তানিকারক দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৫তম।
লেখক : কৃষি ও অর্থনীতি বিশ্লেষক এবং উন্নয়ন গবেষক