এ কারণে এই রোগের প্রতিকার খুঁজতে উন্নত গবেষণার জন্য মাঠে নেমেছেন একদল বিজ্ঞানী। তারা গবেষণা এলাকা হিসেবে বেছে নিয়েছেন দেশের মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও মাগুরা জেলাকে। এসব এলাকার গম খেত গত বছর ‘ব্লাস্ট’ রোগে আক্রান্ত হয়। ইতোমধ্যে গবেষক দল আক্রান্ত এলাকা থেকে রোগাক্রান্ত গম গাছের পাতা, কাণ্ড, শীষ, দানা, বীজ, সুস্থ গাছের বিভিন্ন অংশ, বিকল্প পোষক বিশেষ করে গ্রামীণ বা ঘাস পরিবারের আগাছা, গমের জমিতে বিদ্যমান অন্যান্য আগাছা, গ্রামীণ পরিবারের চাষকৃত অন্যান্য ফসল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এসব নমুনার উপর চলছে গবেষণা।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে এই গবেষক দল গঠন করা হয়। দলের নেতৃত্বে আছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. তোফাজ্জল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে রয়েছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক নূরে আলম সিদ্দিকী, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবু নোমান ফারুক আহম্মেদ ও সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ মহসিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর পর্যায়ে গমের ‘ব্লাস্ট’ রোগ নিয়ে গবেষণারত তিন শিক্ষার্থী পল্লব ভট্টাচার্য, সাইদ হোসেন ও শাবাব মেহবুব। গবেষকদল বর্তমানে ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী গমের জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নতুন জাত উদ্ভাবন করতে পারলে এ সমস্যার সমাধান হবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
অধ্যাপক ড. তোফাজ্জল ইসলাম বলেন, মাঠ থেকে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা করা হবে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গ্রহণ করা হবে। এতে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছেন যুক্তরাজ্যের ‘দ্য সেন্সরি ল্যাবরেটরি’র প্রফেসর সোফিয়েন কামাউন এবং এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিকোলাস টেলবট। তিনি বলেন, গবেষণার জন্য প্রিসপার কাফ-৯ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। যার মাধ্যমে গম গাছ থেকে ‘রিসিপটর জিন’- যা প্যাথোজেনকে গাছটিকে চিনতে সহায়তা করে- সেটিকে সরিয়ে ফেলা হবে। ফলে প্যাথোজেন গম গাছকে চিনতে পারবে না। আক্রমণও করতে পারবে না। ফলে গাছও ভালো থাকবে।
কৃপ্র/এম ইসলাম