কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলায় ৩৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থাপিত হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা। কারখানাটি স্থাপিত হলে চট্টগ্রামের দুধ চট্টগ্রামেই প্রক্রিয়াজাত করা সম্ভব হবে এবং ওই কেন্দ্রেই মাখন, পনির ও বাটারসহ দুগ্ধজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাত করা যাবে।
পূর্ণাঙ্গ দুগ্ধ কারখানাটিতে চট্টগ্রাম বিভাগের সমস্ত সিলিং প্ল্যান্টের দুধগুলো এনে তা প্রক্রিয়াজাত করে চট্টগ্রাম ও সিলেটে বাজারজাত করা হবে। এর ফলে এলাকার পাঁচ শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। একইসাথে নতুন আরও এক হাজার দুগ্ধ খামারী সৃষ্টি হবে। সম্প্রতি প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন হয়েছে। দুগ্ধ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে মিল্কভিটার উদ্যোগে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটি চলতি বছর শুরু হয়ে ২০১৯ সালের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে।
মিল্কভিটার পরিচালক নাজিম উদ্দীন হায়দার জানান, ‘খামারীদের দীর্ঘদিন আশা পূরণ হতে চলেছে। একজন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দিয়ে প্রথমে প্রকল্পের জায়গা নির্ধারনের কাজ শুরু হবে। এরপর টেন্ডার আহবান করে পূর্ণাঙ্গ কারখানা স্থাপনের কাজ শুরু হবে।’ খামারীদের দাবির প্রেক্ষিতে পটিয়ার চরলক্ষ্যায় ‘পটিয়া দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্র’ স্থাপন করা হয়। এ কেন্দ্রে নিয়মিত দুধ সরবরাহ করা হয় পটিয়ার চরলক্ষ্যা, কোলাগাঁও, শিকলবাহা, চর পাথরঘাটা, জুলধা, বড় উঠান, কুসুমপুরা, জিরি, হাবিলাসদ্বীপ, চরকানাই ইউনিয়নে গড়ে ওঠা প্রায় পাঁচশ’ খামার থেকে।
এ কেন্দ্র থেকে বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার লিটার দুধ সংরক্ষণ করে তা ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকা থেকে প্রক্রিয়াজাত করে তা পুনরায় চট্টগ্রামে এনে বাজারজাত করা হয়। এতে প্রতি লিটার দুধে অতিরিক্ত ১৮ টাকা খরচ হয়। এ দীর্ঘসূত্রতা ও অতিরিক্ত অর্থ খরচের জন্য দুধের কম মূল্য পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খামারীরা।
প্রকল্পটি স্থাপিত হলে দুধ নিয়ে ঢাকায় যাওয়া-আসার দীর্ঘ এ জটিলতা থাকবে না। তখন উৎপাদন খরচও অনেক কম হবে। ফলে খামারীরা তাদের দুধের ন্যাযমূল্য পেয়ে লাভবান হবেন। খামারীরা জানান, ‘আমরা শুরু থেকে দাবি জানিয়ে আসছিলাম একটি পূর্ণাঙ্গ দুগ্ধ প্ল্যান্ট যেন স্থাপন করা হয়। অবশেষে সরকার উদ্যোগটি নিয়েছে। আগামীতে পশ্চিম পটিয়ায় আরও অনেক গরুর খামার সৃষ্টি হবে। অনেকের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
চট্টগ্রামের বিখ্যাত মিষ্টি বিপণী হাইওয়ে সুইটস-এর ম্যানেজার হারাধন দত্ত বলেন, ‘আমরা সবসময় চাহিদামত দুধ পাই না। অনেকসময় বাধ্য হয়ে বড় অর্ডার ফিরিয়ে দিতে হয়। পটিয়ায় পূর্ণাঙ্গ মিল্ক প্লান্ট হলে চট্টগ্রাম অঞ্চলের মিষ্টি দোকানগুলো উপকৃত হবে। একইসাথে আমদানিকৃত গুড়ো দুধের ওপর থেকে নির্ভরতা কমবে, যা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করবে।
কৃপ্র/এম ইসলাম