কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ টিস্যু কালচার পদ্ধতিতে সবজি চাষ বিশেষ করে আলু বীজ রাজশাহী অঞ্চলের কৃষিক্ষেত্রে নীরব বিপ্লব এনেছে। টিস্যু কালচার চারা ব্যবহারের মাধ্যমে মানসম্মত ফসল বিশেষ করে আলু চাষ করে এই অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষক তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন।
জীবাণুমুক্ত চারা সরবরাহ করতে রাজশাহীতে ১৫টি টিস্যু কালচার ল্যাবরেটরি বাণিজ্যিকভাবে কাজ করছে। কৃষকেরা এসব চারা ব্যবহারের মাধ্যমে ফসল বা সবজি উৎপাদন করছেন। ইতোমধ্যে বহু কৃষক টিস্যু কালচার প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে চারা উৎপাদনের ফলে আলু, টমেটো, স্টবেরি, কলার বাম্পার ফলন পেয়ে তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন।
পবা উপজেলার বারগাছি গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম বলেন, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি উদ্যোক্তারা বীজ তৈরির আলুর উৎপাদন বৃদ্ধি করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। তিনি বলেন, ভালো ফলন পাওয়ায় আলু চাষীরা মানসম্মত বীজ ব্যবহারের মাধ্যমে আলু চাষে অধিক আগ্রহী। এছাড়া গোদাগাড়ি উপজেলার কৃষক গোলাম রসুল বলেন, টিস্যু কালচার বীজ শতভাগ ভাইরাস ও জীবাণুমুক্ত, স্বাস্থ্যকর, মানসম্মত ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় তুলনামূলক উচ্চফলনশীল ও স্বাস্থ্যকর।
বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উপ-ব্যবস্থাপক (কৃষি) এটিএম রফিকুল ইসলাম বলেন, টিস্যু কালচার প্রযুক্তির সফল সম্প্রসারণের মাধ্যমে বিদ্যমান আলু বীজ সংকট নিরসনের উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুর হোসেন বলেন, কৃষকদের মধ্যে মানসম্মত বীজ ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে ৫০ শতাংশ অধিক আলু উৎপাদন করা যেতে পারে।
তিনি কৃষকদের মানসম্মত বীজ উৎপাদন বাড়াতে উন্নত প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারে উৎসাহিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘গুণগত ও পরিমাণগত উৎপাদন মানসম্মত বীজের ওপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে। স্থানীয় চাহিদা মেটাতে জাতিকে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে।’
তিনি টিস্যু কালচার সম্ভাব্য ও প্রমানিত একটি প্রযুক্তি উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা চাষাবাদে আধুনিক প্রযুক্তির যথাযথ ও সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করে আমদানী নির্ভরতা কমাতে পারি।’ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমান বলেন, বেসরকারি উদ্যোক্তা ও কৃষকেরা টিস্যু কালচার প্রযুক্তি ব্যবহারে আলু বীজ উৎপাদনে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
কৃপ্র/এম ইসলাম