কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বিসিআইসি কর্তৃক কাতার ও চীন থেকে আমদানিকৃত দুই হাজার টন ইউরিয়া সার খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলের গুদামে জমাট বেঁধেছে। আর জমাটবাঁধা সার উত্তোলনে আপত্তি জানিয়েছেন ৭৪ জন ডিলার। ডিলারদের এ আপত্তির প্রেক্ষিতে জমাটবাঁধা ইউরিয়া সার সরবরাহ না করতে বিসিআইসি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটি।
বিসিআইসি সূত্র জানায়, ২০১৬-২০১৭ সালের বোরো মৌসুমের জন্য গত বছরের মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত কাতার ও চীন থেকে ১৪ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানি করা হয়। এ সার রাখা হয় বন্ধ থাকা খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলের গুদাম ও গাড়ির গ্যারেজের পাশে খোলা আকাশের নিচে। এর মধ্য থেকে গত জানুয়ারি পর্যন্ত ১২ হাজার টন সার সরবরাহ করা হয়। আর বাকি আনুমানিক দুই হাজার টন সার গুদাম ও খোলা আকাশের নিচে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। এর পর গত ১৫ জানুয়ারি জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় বিসিআইসির ৭৪ ডিলার নিউজপ্রিন্ট মিলের গুদামে রক্ষিত ওই জমাটবাঁধা সার উত্তোলনে আপত্তির কথা জানান।
কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বোরো মৌসুমের জন্য গত ডিসেম্বর মাসে ১ হাজার ৯৬৬ টন সার বরাদ্দের বিপরীতে ডিলাররা উত্তোলন করেন ৭৯২ টন। আর জানুয়ারি মাসে ৩ হাজার ৪৪ টন বরাদ্দের বিপরীতে উত্তোলন করা হয় ৩ হাজার ৩২৯ টন সার। তবে ফেব্রুয়ারি মাসে ৩ হাজার ৩৪২ টন সার বরাদ্দ করা হলে ডিলাররা নিউজপ্রিন্ট মিলের জমাটবাঁধা সার উত্তোলনে আপত্তি তোলেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আব্দুল লতিফের দেয়া তথ্যানুযায়ী, এ আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে নিউজপ্রিন্ট মিলের জমাটবাঁধা সার সরবরাহ না করার জন্য বিসিআইসি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে। বিষয়টি জানিয়ে বিসিআইসিকে চিঠি দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিসিআইসিকে অনুরূপ অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক শাহাদাত হোসেন বাদশা বলেন, ‘জানুয়ারিতে নিউজপ্রিন্ট মিলের জমাটবাঁধা সার উত্তোলন না করায় বোরো মৌসুমে সংকটের আশঙ্কা রয়েছে। কয়রা ও দাকোপ উপজেলায় বোরো আবাদের পরিমাণ কম হওয়ায় সেখানকার বরাদ্দকৃত সার পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া, দিঘলিয়া ও ফুলতলা উপজেলার ডিলারদের কাছে পাঠানো হচ্ছে।’
এ বিষয়ে বিসিআইসির স্থানীয় ব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) মো. আবু সাইদ জানিয়েছেন, এখানকার গুদামে আনা ৯০ শতাংশ সার এরই মধ্যে সরবরাহ করা হয়েছে। সার জমাট বেঁধে থাকলে তা সরবরাহ করা হবে না। তবে তার দাবি, এসব সারের গুণগতমান নষ্ট হয়নি। আর বিসিআইসি বরাদ্দ দিলে ডিলার তা নিতে বাধ্য থাকবেন।
সুত্রঃ বনিক বার্তা / কৃপ্র/এম ইসলাম