কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
হরীতকী Combretaceae গোত্রের এক ধরনের পাতাঝরা গাছ। বৈজ্ঞানিক নাম Terminalia Chebula। আমাদের দেশের সর্বত্র হরীতকী কম-বেশি পাওয়া গেলেও সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রাম, ঢাকা ও টাঙ্গাইলের বনাঞ্চলে।
হরীতকীর গাছ সাধারণত ১৫ থেকে ২০ মিটার দৈর্ঘ্যের হয়ে থাকে। বৃক্ষটির ব্যাস পরিমাপ করলে দেখা যায়, তা ৫০ থেকে ৮০ সেন্টিমিটারের বেশি হয় না। গাছের ওপরের দিকটা ছাতার মতো এবং ডালপালা ছড়ানো। এর ছাল পুরু এবং অসংখ্য ফাটলযুক্ত। ছাল সাধারণত ধূসর বর্ণের কিংবা প্রায় কালো রঙের। পাতা হয় সাধারণত ডিম্বাকার এবং উপবৃত্তাকার। হরীতকীর ফল শাঁসালো এবং একবীজী। স্বাদ তিতা।কাঠের রং ঘন বেগুনি। কাঠ খুব শক্ত। মধ্যম আকারের টেকসই। ভালো পালিশ হয়। বর্গা আসবাবপত্র ও কৃষি যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য নানাকাজে ব্যবহার হয়।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে ত্রিফলা নামে পরিচিত তিনটি ফলের একটি হরীতকী। ঔষধি গুণে ভরপুর হরীতকীর স্বাদ তিতা হলেও এটি ট্যানিন, অ্যামাইনো এসিড, ফ্রুকটোজ ও বিটা সাইটোস্টেবল সমৃদ্ধ। নানা গুণের কারণে এটি প্রাকৃতিক প্রতিষেধক হিসেবে পরিচিতি আছে।
হরীতকী কি উপকার করে? অ্যালার্জি দূর করতে হরীতকী বিশেষ উপকারি । হরীতকী পানির মধ্যে ফুটিয়ে সেই পানিটা দুবার দিনে নিয়মিত খেলে অ্যালার্জি কমে যাবে। যদি ঠাণ্ডার কারণে গলা ব্যথা হয় বা মুখ ফুলে যায় তাহলে হরীতকী পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে গড়গড়া করলে আরাম পাওয়া যায়।
দাঁতে ব্যথা হলে হরীতকী গুঁড়ো লাগান ব্যথা দূর হবে। চুল ও চেহারার সৌন্দর্য বজায় রাখতে হরীতকীর জুড়ি নেই। এর গুঁড়ো নারকেলের সঙ্গে ফুটিয়ে মাথায় লাগালে চুলের উজ্জ্বল্য বাড়বে। অন্যদিকে হরীতকীর গুঁড়ো পানির মধ্যে মিশিয়ে খেলে ত্বকের চমক বাড়বে। এসিডিটি দূর হবে।
এ ছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে হরীতকী। রাতে শোয়ার আগে অল্প বিটনুনের সঙ্গে ১/২ গ্রাম লবঙ্গ অথবা দারুচিনির সঙ্গে হরীতকীর গুঁড়ো মিশিয়ে খেলে পেট পরিষ্কার হয়ে যাবে।
কৃপ্র/এম ইসলাম