কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ আস্নন আমের মৌসুমে সাতক্ষীরা জেলার ৩৭৭ টি বাগান থেকে আম রফতানি করা হবে। এরই মধ্যে এসব বাগানে বিষমুক্ত উপায়ে আম উৎপাদনের জন্য নিবিড় পরিচর্যা শুরু করেছে নেদারল্যান্ডস-ভিত্তিক সংগঠন সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া, জাতিসংঘ খাদ্য সংস্থা, বিডি ফুড সেফটি ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। একই সঙ্গে রফতানিযোগ্য আম উৎপাদনে ২২০ জন কৃষককে দেয়া হয়েছে উন্নত প্রশিক্ষণ।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আমজাদ হোসেন জানান, রফতানির জন্য চলতি মৌসুমে চার উপজেলার ১০০ হেক্টর জমিতে ৩৭৭টি বাগানে আম উৎপাদন করা হচ্ছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় রয়েছে ১৫০টি বাগান ,কলারোয়ায় ১০০, দেবহাটায় ৪০ ও তালা উপজেলায় ৮৭টি বাগান রয়েছে। এসব বাগানের আমের মধ্যে রয়েছে ল্যাংড়া, হিমসাগর ও আম্রপালি।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার লাবসা গ্রামের আম চাষী মো. লিয়াকত হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে তিনি ২৪ বিঘার একটি বাগানে বিষমুক্ত উপায়ে আম উত্পাদন করছেন। এজন্য তিনি সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া, জাতিসংঘ খাদ্য সংস্থা, বিডি ফুড সেফটি ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত উন্নত প্রশিক্ষণও নিয়েছেন। এরই মধ্যে তার বাগানে ভালো মুকুল এসেছে।
একই উপজেলার কুখরালী গ্রামের আম চাষী গোলাম মোস্তফা জানান, ২০ বিঘা জমিতে রফতানিযোগ্য আমের চাষ করছেন তিনি। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সম্প্রতি তাকে সমন্বিত ব্যবস্থাপনা (আইপিএম) প্রশিক্ষণের জন্য নেদারল্যান্ডস সফরেও পাঠানো হয়।
এদিকে চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরার সাত উপজেলার ৩ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১ হাজার ৫৯০ হেক্টর, কলারোয়ায় ৬০২ হেক্টর, তালায় ৭০৫ হেক্টর, দেবহাটায় ৩৬৮ হেক্টর, কালিগঞ্জে ৮০৫ হেক্টর, আশাশুনিতে ১২৫ হেক্টর ও শ্যামনগর উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। এসব জমিতে আবাদকৃত আমের মধ্যে ল্যাংড়া, হিমসাগর, গোপালভোগ, ফজলি, আম্রপালি, সিঁদুরমেঘ ও লতা অন্যতম।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কাজী আব্দুল মান্নান জানান, এখানকার মাটি ও আবহাওয়া সব ধরনের আম উত্পাদনেরই উপযোগী। বিশেষ করে বিদেশে সাতক্ষীরার হিমসাগর, ল্যাংড়া ও আম্রপালির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তিনি আরো জানান, বিশ্বের অনেক দেশই এখন বাংলাদেশ থেকে আম নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। ফলে সাতক্ষীরায়ও রফতানিযোগ্য আমের উত্পাদন বাড়ছে। এ লক্ষ্যে কয়েক বছর ধরেই এখানে বাণিজ্যিকভাবে আমের বাগান গড়ে তোলা হচ্ছে।
সুত্রঃ বনিক বার্তা/ কৃপ্র/এম ইসলাম