কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় লিচু বাগানের জমিতে বাড়তি ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়া আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন চাষীরা। তাই কম খরচেই মিষ্টি কুমড়া আবাদ করে বাড়তি টাকা পেয়ে সচ্ছলতা ফিরছে কৃষকদের পরিবারে। কয়েক বছর থেকে পরীক্ষামূলকভাবে বাগানের জমিতে আবাদ করে লাভবান হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে লিচু বাগানে মিষ্টি কুমড়ার চাষ।
বিরল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিরল উপজেলার ২ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় লিচু চাষ বেশি লাভজনক হওয়ায় দিন দিন বেড়েই চলেছে লিচু বাগানের সংখ্যা। সেসঙ্গে বাড়ছে পতিত জমির পরিমাণও। তাই পতিত জমিকে কাজে লাগানোর জন্য কৃষককে উদ্বুদ্ধ করতে থাকে কৃষি বিভাগ।
বিরল উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামসুল হক জানান, প্রতিটি লিচু বাগানেই প্রচুর পরিমাণে জমি পতিত থাকে। এ জমি কাজে লাগানোর জন্য কৃষকদের বিভিন্নভাবে উত্সাহিত করা হয়। স্থানীয় কৃষি বিভাগের উত্সাহে ও তত্ত্বাবধানে পড়ে থাকা এসব জমিতে কৃষকরা শুরু করেন মিষ্টি কুমড়া আবাদ। এতে ফলন ভালো হওয়ায় লাভবান হন কৃষকরা। পরে সফল চাষীদের দেখাদেখি জেলার অনেক কৃষকই এখন লিচু বাগানে মিষ্টি কুমড়া চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগে লিচু বাগানের পতিত জমিতে কোনো ফসল হতো না। তাদের ধারণা ছিল, লিচু গাছের তলায় কোনো ফসল ফলানো সম্ভব হবে না। কিন্তু কৃষি অফিসের পরামর্শে পতিত জমিতেই মিষ্টি কুমড়া আবাদ করে লাভবান হন কৃষকরা। তাই দিন দিন লিচুর সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়া চাষ বাড়ছে ব্যাপক।
কৃষকরা জানান, সামান্য সেচ ও গোবর সার এবং ছাই দিয়ে মিষ্টি কুমড়া চাষ করা হয়। এক্ষেত্রে শ্রমিকেরও বেশি প্রয়োজন হয় না। তাই সাথি ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে যে আয় হয়, তা দিয়ে সংসারের খরচ ভালোভাবেই চলে।
বিরল উপজেলার মাধববাটী গ্রামের কৃষক মনিরুজ্জামান মনি জানান, এক বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়া আবাদ করতে খরচ হয় প্রায় ১০ হাজার টাকা। আর এ জমি থেকে মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হয় প্রায় ৪০ হাজার টাকার। এতে খরচ বাদ দিয়ে এক বিঘা জমিতে লিচু ছাড়াই শুধু মিষ্টি কুমড়া আবাদ করে লাভ হয় ৩০ হাজার টাকা।
এদিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানান, লিচুর সাথি ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়, এটা বিরল উপজেলার কৃষকদের কাছে অজানা ছিল। এখন কৃষি অফিসের পরামর্শে কৃষকরা লিচু বাগানে পড়ে থাকা জমিতে মিষ্টি কুমড়া আবাদ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। এছাড়া লিচু বাগানে উৎপাদিত এসব মিষ্টি কুমড়া সম্পূর্ণ বিষমুক্ত বলে জানান তিনি।
সুত্রঃ বনিক বার্তা / কৃপ্র/এম ইসলাম