ভূট্টা থেকে ৪০ প্রকার খাদ্য উৎপাদন করা যায়!
আমাদের দেশে ভুট্টা চাষ লাভজনক হওয়ায় কৃষকরা এ ফসল চাষে দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ভুট্টার উৎপাাদনও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ভূট্টা থেকে আটা তৈরি করে ৪০ প্রকার খাদ্য উৎপাদন করা যায়। এছাড়া গরু খাদ্য, মাৎস্য খাদ্যসহ ৩০ প্রজাতির প্রাণী সম্পদের খাদ্যে ভুট্টা থেকে তৈরি করা হয় নানা প্রকার খাদ্য উপাদান। এ বছর শেরপুর জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আওতায় ৫শ’২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ করা হয়েছে। শুধু মাত্র তালিকাভুক্ত চাষীদের মাধ্যমে নয়। ব্যক্তি উদ্যোগেও জেলার সর্বত্র ২৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়।
শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার বাছুর আলগা গ্রামের নুরে আলম সিদ্দিকী রাজু জানান, এবছর তিনি সাড়ে আট একর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। শ্রমিরে মজুরি, বীজ, সার ও চাষাবাদসহ প্রতি একরে তার খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। তার জমিতে দুই লাখ টাকা খরচ হয়। তিনি আটশ’ মন ফসল পেয়েছেন। যার বাজার মূল্য ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তিনি বলেন, ধান, পাট কিংবা অন্যান্য ফসল থেকে এ মৌসুমে এ পরিমাণ অর্থ পাওয়া যাবে না। তাই তিনি ভুট্টা চাষ করেছেন।
কৃষকরা ভুট্টার বহুবিধ ব্যবহারের গুণাগুণ পেয়ে, দিনে দিনে এর আবাদ বৃদ্ধি করছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেরায় চলতি মৌসুমে ৫শ’ ২০ হেক্টর জমিতে ৪১ লাখ ৬০ হাজার কেজি ভূট্টা উৎপাদিত হবে। এবছর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় কমিশনার জি এম সালেহ উদ্দিন বলেন, ভুট্টার চাষ বেশি হলে, এদেশে প্রাণী সম্পদের খাদ্যের অভাব হবে না। তিনি প্রাণী সম্পদ বিভাগকে ভুট্টা চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করার পরামর্শও দেন। এদিকে কায়দা গ্রামে ১৫ জন, কাজাইকাটায় ২৫ জন, নারায়ণখোলায় ৬০ জন, ধুকুরিয়ায় ২০ জন, বানেশ্বর্দীতে ৭ জনসহ এ উপজেলায় তিন শতাধিক চাষী ভুট্টা চাষ করেছেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আশ্রাফ উদ্দিন বাসসকে জানান, ৫২০ হেক্টর জমিতে এবছর উন্নত জাতের ভুট্টা চাষ করা হয়। এবার আবহাওয়া অনুক’লে থাকায় এবং চাষীরা ফসলের সঠিকভাবে পরিচর্যা করায়, ফলন অনেক ভালো হয়েছে। উৎপাদিত ভুট্টা বাজারে বিক্রি করে প্রতি কেজি মূল্য পাওয়া যায় ২০ টাকা। তাই কৃষকরা আগামীতে ভুট্টা চাষে আরও উৎসাহিত হবেন। নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরীফ ইকবাল জানান, ভুট্টা চাষে যেসব চাষী লাভবান হয়েছেন, তারা আগামীতে এ ফসল আবাদে বেশি আগ্রহী হবেন। তিনি বলেন, ভুট্টা চাষ বৃদ্ধি পেলে, মানুষের খাদ্যে পুষ্টিমান অনেকাংশে বাড়বে। উৎপাদিত হবে শিশু খাদ্যও।
সুত্রঃ বাসস