কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ নাটোর জেলায় কৃষিতে যুক্ত হয়েছে জিরা চাষ। সদর উপজেলার ২ জন কৃষক এবারই প্রথমবারের মত সম্ভাবনাময় জিরার চাষ করেছেন। হলুদের চাদরে ঢাকা জিরার জমিতে মৌমাছির গুঞ্জন সমৃদ্ধির জানান দিচ্ছে। নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী দিয়ার এলাকার কৃষক মাহবুব ইসলাম ১০ কাঠা জমিতে জিরার চাষ করেছেন। অপ্রচলিত শস্যের প্রতি আগ্রহী কৃষক মাহবুব ইসলাম জিরার চাষাবাদ সম্পর্কে বলেন, অগ্রহায়ণ মাসে জমি চাষ করে ১০ কাঠা জমিতে আধা কেজি বীজ ব্যবহার করা হয়। ফলন উঠে বৈশাখে। এর মধ্যে দুইটি নিড়ানী ও তিনটি সেচ গাছের পরিচর্যার জন্য যথেষ্ট। ফুলের সতেজতা ও পরিপক্ক ফলনের জন্য শ্যাম্পু স্প্রে এবং কুয়াশার প্রভাবে হাবরী পোকা দমনে কিছুটা কীটনাশক প্রয়োজন। সবমিলিয়ে খরচ ৮ হাজার টাকার মত।
একডালা নারায়নপুর এলাকার কৃষক হাবিবুর রহমান একই পরিমাণ জমিতে প্রথমবারের মত জিরা চাষ করেছেন। পরীক্ষামূলক জিরার চাষ সফলতা পেতে যাচ্ছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ১০ কাঠা জমিতে ৫ মণ ফলন পাওয়া যাবে। হাবিবুর রহমান আরো বলেন, এলাকার দেড় শতাধিক কৃষক পরবর্তী মৌসুমে জিরা চাষের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। মনে হয়, উৎপাদিত শস্যের পুরোটাই বীজ হিসেবে কৃষকদের কাছে বিক্রি করতে হবে। প্রতি কেজি বিক্রি মূল্য ১০০ টাকা। আর বাণিজ্যিকভাবে জিরা বিপণন করতে হলে মাঠ থেকে ফলন সংগ্রহ করে সিদ্ধ ও শুকানোর পরে তা বিক্রি করা যায়। এক্ষেত্রে বিক্রি মূল্য ৩০০ টাকা। প্রতিদিন কৃষক ছাড়াও অসংখ্য দর্শনার্থী জিরার মাঠ দেখতে আসছেন।
নাটোর নবাব সিরাজ উদ্ দৌলা সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী আজমিরা হোসেন বলেন, সরিষা ফুলের চেয়েও জিরার ফুলের সৌন্দর্য বেশি। বসনÍকে পূর্ণতা দিয়েছে যেন এই হলুদের চাদর। হাজারো মৌমাছির গুঞ্জনে যে কোন ব্যক্তির মন ভালো হয়ে যাওয়ার সৌন্দর্য ছড়িয়ে আছে জিরার জমির থোকা থোকা ফুলে।
এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল জলিল মৃধা বলেন, শুক্রবার রাতের ঝড়-বৃষ্টিতে জিরার জমিতে সেচের উপকার হওয়ার পাশাপাশি গাছ কিছুটা হেলে পড়লেও এখন তা স্বাভাবিক হয়েছে। নতুন শস্যের কারণে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক পরিবীক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কৃষককে।
নাটোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. মো. সাইফুল আলম বলেন, জিরা চাষে অল্প পানি প্রয়োজন হয় বলে এটি পরিবেশবান্ধব এবং লাভজনক শস্য। তাই নতুন এই শস্যের চাষাবাদে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভবিষ্যতে কৃষি বিভাগ এ ব্যাপারে কৃষকদের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও পরামর্শ প্রদান করবে।
সুত্র; বাসস / কৃপ্র/এম ইসলাম