বৃষ্টি হলেই সীমাহীন দুর্ভোগে কাটে ডেমরা-নারায়ণগঞ্জ ডিএনডি বাঁধের ভেতরে বসবাসরত লাখ লাখ মানুষের। কারণ বৃষ্টি হলেই এ বাঁধের ভেতরে জমে পানি। জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে লোকজনের। গত দুদিন যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তা অনবরত ঝরতে থাকলে ডিএনডি এলাকায় জলাবদ্ধতা দুর্ভোগ আরো বাড়বে।
টানা বৃষ্টিতে ডিএনডি বাঁধের ভেতরে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা ও এর আশপাশের ডিএনডি অধ্যুষিত এলাকার নিচু এলাকায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। পানিতে তলিয়ে যায় রাস্তাঘাট, বাড়িঘর ও শিল্প-কারখানা। দুর্ভোগে পড়ে লাখ লাখ মানুষ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পানি নিষ্কাশনের খালগুলো দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ শহরের অধিকাংশ স্থানে দেখা যাচ্ছে জলাবদ্ধতা। বৃষ্টিতে শহরের অনেক এলাকার সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। শহরের প্রধান প্রধান সড়কেও বৃষ্টির পর জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
পাকিস্তান আমলে ডিএনডি বাঁধের অভ্যন্তরে সেচ প্রকল্প গড়ে তোলা হয়। বাঁধটি সড়ক যোগাযোগেও ব্যবহার করা হয়। ১৯৮৮ সালের বন্যায় দেশের বিভিন্ন স্থান পানিতে তলিয়ে গেলেও এ বাঁধের অভ্যন্তর ছিল বন্যামুক্ত। সেখানে গড়ে ওঠে বাড়িঘর, শিল্পকারখানা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বৃষ্টিতে ৩২ দশমিক ৮ কি.মি ডিএনডি বাঁধের ভেতর ৫৬ কি.মি বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ডিএনডির পানি নিষ্কাশনে যে খাল রয়েছে তা বেদখল হয়ে আছে। বিভিন্ন স্থানে খালের ওপর মাচা দিয়ে ও বালু ভরাট করে আধা পাকা দোকানঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। অনেকে বেআইনিভাবে খালের ওপর কৃত্রিম কালভার্ট তৈরি করে সচলতায় বাধা সৃষ্টি করছে। এ কারণে খাল সরু নালায় পরিণত হচ্ছে। জলাবদ্ধতার পানি সরু খাল দিয়ে দ্রুত গতিতে নিষ্কাশন হতে পারছে না।
ডিএনডির অভ্যন্তরে বসবাসরত ২০ লাখ মানুষকে কৃত্রিম বন্যা আর জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে গত বছরের মাঝামাঝিতে একনেকে ৫৩৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদিত হয়। কিন্তু ওই প্রকল্পের কাজ এখনো শুরু হয়নি। গত বছর সরকারের ওই উদ্যোগের ফলে ডিএনডিবাসী জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে নিস্তারের স্বপ্ন দেখতে শুরু করলেও সম্প্রতি আকস্মিক বৃষ্টিতে তাদের সেই স্বপ্ন ফিকে হতে শুরু করেছে।
সুত্রঃ ইত্তেফাক / কৃপ্র/এম ইসলাম