কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ সুপারির ভালো দাম থাকায় পঞ্চগড় জেলার সুপারি চাষিদের মুখে খুশির হাসি ফুটেছে। এখানে কৃষিপণ্য হিসেবে ব্যাপক হারে সুপারির চাষ হচ্ছে। আপতকালীন সময়ে সুপারি বিক্রি করে সংসারের চাহিদা মিটছে অনেক কৃষকের। বাজারে সুপারি দাম ভাল থাকায় এবং সুপারি চাষ লাভজনক হওয়ায় অনেকেই এখন সুপারি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। জেলার প্রায় সব কয়টি হাটবাজারে কমবেশি সুপারির হাট বসে। সবচেয়ে বেশি সুপারি বিক্রি হয় বোদা নগরকুমারী হাটে। এই হাটে দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা সুপারি কিনতে আসে।
বোদা সুপারির হাটে ব্যবসায়ী ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১ পণ (২০ হালি) সুপারি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা দরে। দেশে সুপারির অন্যতম উৎপাদনকারী এলাকা হিসেবে পঞ্চগড় সু-পরিচিত। দেশে উৎপাদিত সুপারির বড় অংশ পঞ্চগড় এলাকায় উৎপাদিত হয়। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কমবেশি সুপারির গাছ রয়েছে। অনেক কৃষক বাণিজ্যিকভাবে বাগান গড়ে তুলেছেন এ এলাকায়। কয়েকজন সুপারি ব্যবসায়ী বলেন, সুপারি সাধারণত এপ্রিল থেকে বিক্রি শুরু হয় ও তা জুন মাস পর্যন্ত চলে। এ সময় কৃষকেরা বোরো, গমসহ রবিশস্য চাষে ব্যস্ত থাকেন।
এ সময় কৃষকের হাতে কোনো টাকা পয়সা না থাকায় তাঁরা সুপারি বিক্রি করে পরিবারের দৈনন্দিন চাহিদা মিটিয়ে থাকেন। কথা হয় বামনহাট এলাকা থেকে সুপারি বিক্রি করতে আসা ওসমান গণির (৫০) এর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাড়ির আশপাশে লাগানো ৪০টি সুপারির গাছ থেকে বছরে ৩-৪ হাজার টাকার সুপারি বিক্রি করি। এবার সুপারির দাম ভালো। যে সময়ে কৃষকের হাতে কোনো টাকা পয়সা থাকে না, সে সময়ে সুপারি বিক্রি করে সংসারের চাহিদা ও কৃষিকাজে লাগানো যায়। নয়াদিঘী এলাকার মোঃ আব্দুর রহমান বলেন, সুপারির বাগান থেকে প্রতি বছর লাখ টাকার সুপারি বিক্রি করি। বোদা বাজারের বড় সুপারি ব্যবসায়ী সাতখামার এলাকার মুসলিম বলেন, বোদা বাজারসহ আশপাশের হাটগুলোতে প্রতি সপ্তাহে লাখ লাখ টাকার সুপারি কেনাবেচা হয়। এই সুপারি রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন অর রশিদ বলেন, সুপারি চাষ একটি লাভজনক কৃষিপণ্য। বাড়ির আনাচে কানাচে সুপারির গাছ লাগিয়ে দু-তিন বছরের মধ্যে ফলন পাওয়া যাবে। সুপারির গাছের জন্য স্বল্প পরিমাণ জায়গা লাগে। এছাড়া বাড়ির আশপাশে উঠানে সুপারির বাগান গড়ে তোলা যায়। অনেকে বানিজিকি ভাবে সুপারির চাষ করছেন।