কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ ‘স্কোয়াশ’চাষ করে ৯০ দিনেই লাখপতি হয়েছেন মানিকগঞ্জের জয়নাল। ব্যাপক লাভজনক হওয়ায় মানিকগঞ্জের ঘিওরে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে স্কোয়াশ আবাদ। স্কোয়াশ আবাদে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে বেশ আগ্রহ দেখা দিয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি স্কোয়াশ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। স্কোয়াশ দেখতে লাউ আকৃতির এবং খেতে সুস্বাদু। উচ্চফলনশীল এই জাতের ফসল ভাজি, মাছ ও মাংসের সঙ্গে রান্না করে খাওয়ার উপযোগী। বিশেষ করে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সবজি এবং সালাদ হিসেবে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
ঘিওরে স্কোয়াশচাষ করে সফল হয়েছেন পুরাণ গ্রামের মো. জয়নাল আবেদীন ঝণ্টু ও বাষ্টিয়া গ্রামের মো. ফরমান মিয়া। জয়নাল আবেদীন সাত বিঘা জমিতে স্কোয়াশ আবাদ করেছেন। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে এক লাখ টাকা। পাঁচ দফায় বিক্রি হয়েছে দুই লক্ষাধিক টাকা। আরও এক থেকে দেড় লাখ টাকার মতো স্কোয়াশ বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী। মাত্র ৯০ দিনেই লাখপতি হওয়ার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। পাশের বাষ্টিয়া গ্রামের মো. ফরমান প্রথমবারের মতো স্কোয়াশ আবাদ করেছেন ২০ শতাংশ জমিতে। তিনিও বিক্রি করেছেন ২৫ হাজার টাকার মতো।
জয়নাল আবেদিন ঝণ্টু বলেন, ২৫-৩০ দিনে ফুল থেকে সবজি ধরতে শুরু করে। ৪০-৪৫ দিনের মাথায় ক্ষেত থেকে সবজি তুলে বাজারে ওঠান। বাজারের প্রথম দিনের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি জানান, নতুন সবজি পেয়ে ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। রাজধানী ঢাকার কারওয়ান বাজার ও বাইপাইল সবজি আড়তে তিনি পাইকারী মণপ্রতি ৪০০ থেকে সাড়ে ৪৫০ টাকায় বিক্রি করেন।
মো. ফরমান মিয়া জানান, অল্প সময়ে ও অন্যান্য ফসলের চেয়ে কম খরচে স্কোয়াশ উৎপাদন করা যায়। তা ছাড়া এক বিঘা জমিতে যে পরিমাণ কুমড়া লাগানো যায় তার চেয়ে দ্বিগুণ এ সবজি আবাদ করা সম্ভব। গাছের একেকটি গোড়ায় ৮ থেকে ১২টি পর্যন্ত স্কোয়াশ বের হয়। জয়নাল আবেদীনের সফলতায় দেখাদেখি স্কোয়াশচাষ করেছেন বানিয়াজুরী, বালিয়াখোড়া, মাইলাঘী, আশাপুর, সিংজুরী, রাধাকান্তপুরসহ আশপাশের গ্রামের অসংখ্য কৃষক। ভালো বীজের নিশ্চিয়তা ও চাষের প্রয়োজনীয় পরামর্শ মিললে এটি এ অঞ্চলের প্রধান অর্থকরী ফসল হতে পারে বলে মনে করেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।
এ ব্যাপারে ঘিওর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফ উজ্জামান বলেন, স্কোয়াশ আমাদের এখানে নতুন সবজি। এই সবজি আবাদে অন্যান্য ফসলের চেয়ে উৎপাদন ও মুনাফা দুটোই বেশি। স্কোয়াশ আবাদে কৃষককে যে কোনো পরামর্শ কিংবা সহায়তা দিতে মাঠকর্মীদের গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে বলা হয়েছে।
সুত্রঃ যায়যায় দিন /