কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ সয়াবিনের রাজধানী হিসেবে খ্যাত লক্ষ্মীপুরে এ বছর সাড়ে ৫০হাজার হেক্টর জমিতে সয়াবিন চাষাবাদ হয়েছে। আবাদকৃত গাছে ইতিমধ্যে সয়াবিনের ফলন দিতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার সাড়ে ৩শ’ কোটি টাকার সয়াবিন উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। এদিকে রাষ্ট্রয়াত্ব ৪টি ব্যাংক এবার ৪% সুদে ও কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (কোডেক) নামের একটি এনজিও সয়াবিন চাষীদের মাঝে কৃষি ঋণ প্রদান করেছে।
জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, দেশের মোট সয়াবিনের প্রায় ৭০ভাগ লক্ষ্মীপুরে উৎপাদন হয়। এখানে উৎপাদিত সয়াবিনের অধিকাংশই পোল্ট্রি খাদ্য তৈরীতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এবছর জেলায় ৫০হাজার ৫০৫হেক্টর জমিতে সয়াবিন চাষাবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ৭হাজার ৯৫০ হেক্টর, রায়পুর ৭ হাজার ৯৬০হেক্টর, রামগতি ১৮হাজার ২০০হেক্টর, কমলনগর ১৬ হাজার ৩১০হেক্টর ও রামগঞ্জ উপজেলায় ৮৫হেক্টর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার এক লাখ মেট্রিক টনের বেশী সয়াবিন উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য সাড়ে তিন শ’ টাকার বেশী বলে জানিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
জেলার রামগতি, কমলনগর, রায়পুরের চরাঞ্চলে এ বছর ব্যাপক সয়াবিনের ফলন হয়েছে। কৃষকরা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার মাঠে আগাছা ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম। এছাড়া অনুকূল আবহাওয়া ও সঠিক সময়ে বীজ বপন করতে পারায় চাষাবাদ ভাল হয়েছে । তারা জানিয়েছে কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে এবার চাষাবাদে খরচ অনেক বেড়েছে। চাষাবাদে খরচ বাড়লেও সয়াবিনের নায্য দাম পাবে কিনা এ নিয়ে শঙ্কিত তারা। তাদের ধারণা এখানে সয়াবিনভিত্তিক শিল্প কারখানা গড়ে উঠলে চাষীরা তারা ন্যায্য মূল্য পেতেন এবং আরো বেশী সয়াবিন আবাদ করতেন।
সোনালী ব্যাংক লক্ষ্মীপুর শাখার এজিএম মফিজুর রহমান জানান, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে সয়াবিন চাষি কৃষকদের মাঝে রাষ্ট্রয়ত্ব ৪টি ব্যাংকের স্থানীয় শাখা থেকে সহজ শর্তে ঋণ বিতরণের টার্গেট ছিল এক কোটি ১৬লাখ টাকা। এরমধ্যে গত ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ২০৪ সয়াবিন চাষির মাঝে এক কোটি ৯লাখ টাকার কৃষি ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। কমলনগর উপজেলার চরআলগী, চরবাদাম এলাকার সয়াবিন চাষী ইসমাইল হোসেন ও আবদুল আলি জানান, তারা কৃষি ঋণ নিয়ে সয়াবিন চাষ করেছেন। এবার মাঠে আগাছা ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ তেমন নেই। এছাড়া অনুকূল আবহাওয়া ও সঠিক সময়ে বীজ বপন করতে পারায় ভাল চারা গজিয়েছে। ইতোমধ্যে ফলনও শুরু হয়েছে। এবার বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা। তবে কীটনাশকসহ কৃষি উপকরনের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার উৎপাদন খরচ বেশী হয়েছে।
জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক গোলাম মোস্তফা জানান, কাঙ্খিত ফলনের জন্য উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে সয়াবিন চাষিদের সহযোগীতা করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার রেকর্ড পরিমাণ সয়াবিন উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সুত্রঃ বাসস / কৃপ্র/এম ইসলাম