কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জে ডালের বাজারে মিশ্র প্রবণতা বিরাজ করছে । এখানে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় রয়েছে মুগ ডালের দর। তবে খেসারি ও মসুর ডালের দাম কমতির দিকে রয়েছে। অন্যান্য ডালের বাজার মোটামুটি এক মাস ধরে স্থিতিশীল। মুগ ডালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৮ টাকা। দরবৃদ্ধি প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীরা বলছেন, মুগ ডালের মৌসুম শেষ দিকে চলে এসেছে। তাই বাজারে পণ্যটির সরবরাহ কম। সে তুলনায় চাহিদা বেশি থাকায় দাম বাড়তে শুরু করেছে। অন্যদিকে একই বাজারে ১৫ দিনের ব্যবধানে কেজিতে ১৫ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে খেসারি ডালের। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাজারে চাহিদার তুলনায় পণ্যটির সরবরাহ বেশি থাকায় দরে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। নিতাইগঞ্জে অ্যাংকর, ডাব্লিসহ অন্যান্য ডালের দাম মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
নিতাইগঞ্জের ডালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গতকাল প্রতি কেজি মুগ ডাল বিক্রি হয়েছে ৯৭-৯৮ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে একই ডাল বিক্রি হয়েছিল ৮৯ টাকা কেজিদরে। এ হিসাবে ১৫ দিনের ব্যবধানে পণ্যটির দাম কমেছে কেজিতে প্রায় ৮ টাকা। এ প্রসঙ্গে নিতাইগঞ্জের ডাল ব্যবসায়ী আজাহার উদ্দিন জানান, এক সপ্তাহ ধরে মুগ ডালের বাজার বাড়তির দিকে রয়েছে। মুগ ডাল আমদানিনির্ভর নয়। দেশে উত্পাদিত ডাল দিয়েই স্থানীয় চাহিদা মেটানো হয়। এ ডালের মৌসুম শেষ দিকে চলে আসায় বাজারে সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। মূলত এ কারণেই পণ্যটির দাম বাড়ছে বলে মনে করেন তিনি।
অন্যদিকে নিতাইগঞ্জে গতকাল প্রতি কেজি খেসারি ডাল বিক্রি হয়েছে ৫৭-৫৮ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে একই ডাল কেজিপ্রতি ৭০-৭১ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এ হিসাবে ১৫ দিনের ব্যবধানে খেসারি ডালের দাম কমেছে কেজিতে ১৫ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া দেশী মসুর ডাল প্রকারভেদে ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ১০২ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক মাসের ব্যবধানে দেশী মসুর ডালের দাম কমেছে কেজিতে ৩-৪ টাকা। গতকাল প্রতি কেজি দিল্লি সুপার ডাল বিক্রি হয়েছে ১২০-১২৪ টাকায়। কয়েক মাস ধরে দিল্লি সুপার ডালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
মসুর ডালের দরপতন সম্পর্কে নিতাইগঞ্জের রাজলক্ষ্মী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী তুলশী সাহা জানান, বাজারে সরবরাহ বেশি থাকায় এক মাস ধরে মসুরসহ বেশ কয়েকটি ডালের দাম কমছে। নিতাইগঞ্জে গতকাল প্রতি কেজি অ্যাংকর ডাল বিক্রি হয়েছে ৩২-৩৩ টাকায়। আর প্রতি কেজি ডাব্লি বিক্রি হয়েছে ৩১ টাকায়। প্রায় এক মাস বাজারে এ দুই ডালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে ডালের বাজারে মন্দাভাব বিরাজ করছে। কিছুদিন আগেও নিতাইগঞ্জের প্রতিটি ডালের গদিতে দৈনিক ১০০
থেকে ১৫০ বস্তা ডাল লেনদেন হতো। এখন তা দৈনিক ২০-৪০ বস্তায়
নেমে এসেছে।
এ সম্পর্কে নিতাইগঞ্জের ডাল ব্যবসায়ী মদন মোহন জানান, নিতাইগঞ্জে ৭০ থেকে ৮০ জন ডাল ব্যবসায়ী রয়েছেন। এদের বেশির ভাগই চট্টগ্রাম থেকে ডাল এনে স্থানীয় মিলগুলোয় ভাঙেন। তার পর আড়তে তুলে পাইকারি হিসাবে বিক্রি করেন। বর্তমানে বাজারে ডালের প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। সে তুলনায় চাহিদা বেশ কম। এ কারণে মুগ ডাল ছাড়া অন্য সব ডালের দাম কমতির দিকে রয়েছে বলে জানান তিনি।
সুত্রঃ বনিক বার্তা / কৃপ্র/এম ইসলাম