কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ দারিদ্র্যকে জয় করেছেন এন্তাজ আলী। পিতার কাছ থেকে পাওয়া সামান্য জমির আয় দিয়েই তিনি এখন মালিক হয়েছেন ৫ বিঘা জমির। জয়পুরহাট সদর উপজেলার মোহাম্মাদাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব পারুলিয়া গ্রামের অজিমদ্দিনের ছেলে এন্তাজ আলী (৩৮)। পিতার সংসারে অভাব অনটনের কারণে নিজের ভাগ্যে তেমন লেখাপড়া করার সুযোগ না হলেও দুই ছেলেকে লেখাপড়া করাচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি এলাকায় সফল সবজি চাষি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।
এন্তাজ আলী জানান, নিজের সামান্য জমিতে প্রথমে লাউ চাষ শুরু করি ৫ বছর আগে। এতে ভালো লাভ হয়। এরপর ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুনসহ নানা ধরনের শাক-সবজি চাষ করতে থাকি। এখান থেকে সবজি চাষের নেশায় পড়ে যাই। নিজের সামান্য জমির সঙ্গে বর্গা জমিতে সবজি চাষ করি। যে মৌসুমে যে সবজির চাষ হয় সেটি করে থাকি। বর্তমানে ২০ শতাংশ জমির অর্ধেকে লাল শাক বাকি অর্ধেকে লাউ চাষ করেছেন। লাল শাক চাষে ৮শ’ টাকা খরচ হলেও ইতোমধ্যে ৪ হাজার টাকার শাক বিক্রি করেছেন। বাজারে দাম ভাল পাওয়ায় আরো ৪/৫ হাজার টাকার শাক বিক্রি হবে বলে আশা করেন তিনি।
লাউ চাষে খরচ পড়েছে ১ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে ১০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি করেছেন বলে জানান এন্তাজ আলী। একদিন পর পর ৫০ থেকে ৬০টি লাউ বাজারে বিক্রি করেন। পাইকারী হিসেবে প্রতিটি লাউ বিক্রি হয় ১৫ থেকে ২০ টাকা সাইজ অনুযায়ী। সামনের দেড় মাসে আরো এক হাজার পিস লাউ বিক্রি করবেন বলে আশা করেছেন তিনি। লাউ চাষে খরচ কম হওয়ায় লাভ বেশি হয়।
ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত চার মাসের ফসল লাউ চাষ করে খরচ বাদে ২০/২৫ হাজার টাকা লাভ থাকবে আশা এন্তাজ আলীর। এ ছাড়াও এবার অন্যান্য সবজি থেকেও প্রায় ৬০ হাজার টাকা লাভ করেছেন তিনি। সংসাসের খরচ চালিয়েও বড় ছেলে ইমন হোসেন এইচএসসিতে এবং ছোট ছেলে রিপন হোসেন ৭ম শ্রেণীতে লেখাপড়া করছে। সংসারের আয় থেকে ৩ বিঘা জমি বর্গা নিয়েছেন। শাক ও লাউ বিক্রি শেষ হলে সেই জমিতে স্বল্প মেয়াদী ফসল হিসেবে বেগুন, পটল, করলা চাষ করবেন বলে জানান এন্তাজ আলী।
এলাকায় একজন সফল সবজি চাষির খেতাব অর্জন করলেও একটি পাওয়ার টিলার কেনার স্বপ্ন এন্তাজ আলীর দীর্ঘ দিনের। কিন্তু স্বল্প আয়ের কারণে সেই স্বপ্ন এখনও পূরণ করতে পারেননি এন্তাজ আলী। একটি পাওয়ার টিলার হলে এলাকায় সবজির বিপ্লব ঘটাবেন বলে জানান তিনি। বিভিন্ন মেয়াদী সবজি চাষ করার আয় দিয়েই দারিদ্র্যকে জয় করেছেন এন্তাজ আলী।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুধেন্দ্রনাথ রায় বলেন, জয়পুরহাটে ব্যাপক সবজির চাষ হয়ে থাকে। গুণাগুণ বিবেচনায় মাটি সবজি চাষে উপযোগী হওয়ায় উৎপাদনও ভাল হয়। সবজি চাষে কৃষক পর্যায়ে উদ্বুদ্ধকরণের জন্য সরকারিভাবে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
সুত্রঃ বাসস/ কৃপ্র/এম ইসলাম