কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ ফরিদপুর জেলার মধুখালীর কৃষকরা মরিচ খেতে সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টিকুমড়া আবাদ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। কোনো প্রকার কিটনাশক ও রাসয়নিক সার ব্যবহার না করে শুধু বালাই নাশক ও সেক্স ফেরমোন ট্রাপ স্থাপনের মাধ্যমে বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি কুমড়ার চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। মধুখালী উপজেলার কৃষকরা ব্যাপকভাবে মরিচের চাষ করে থাকেন। মৌসুম শেষের দিকে মরিচের গাছের মধ্যে কৃষকরা মিষ্টিকুমড়ার ও লাউ আবাদ করেন। মরিচ খেতে মিষ্টিকুমড়ার বীজ রোপন করার ফলে কৃষকদের অতিরিক্ত সার ও কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। এমনকি মিষ্টিকুমড়ার জন্য বাড়তি মাচার দরকার হয় না। মরিচ গাছ-ই মাচার কাজে ব্যবহার হযে থাকে। ফলে মরিচ খেতে অল্প খরচে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করে কৃষকেরা ব্যাপকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
মধুখালী উপজেলা মহিষাপুর গ্রামের কুমড়া চাষী লিয়াকত আলী শেখ, সাহাদাৎ হোসেন, মোতালেব মোল্যা, আলী আকবর জানান, উপজেলা কৃষি কৃর্মকর্তা কৃষিবিদ খালেদা পারভীনের পরামর্শে চলতি বছর ১৮ হেক্টর জমিতে সেক্স ফেরমোন ট্রাপের মাধ্যমে মিষ্টিকুমড়ার আবাদ করেছেন। প্রতি হেক্টর জমিতে লেবার, বীজ, জৈব সার, সেক্স ফেরমোন ট্রাপ মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। আর প্রতিহেক্টোর জমিতে যে পরিমাণ মিষ্টিকুমড়া উৎপাদন হয়েছে তা প্রায় দুই লাখ বিক্রি করতে পারবেন। এতে কৃষকদের প্রতি হেক্টর জমিতে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা লাভ হবে। কোনোপ্রকার কীটনাশক ব্যবহার না করেই নিরাপদ বিশমুক্ত সবজি উৎপাদন করছে মধুখালী উপজেলার কৃষকেরা।
মধুখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খালেদা পারভীন বলেন, “মধুখারীতে চলতি বছর মোট দুই হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে কুমড়ার আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হেক্টর জমিতে কৃষকদের সেক্স ফেরমোন ট্রাপ ব্যবহার করা হয়েছে। সেক্স ফেরমোট ট্রাপ স্থাপনের ফলে ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামিতে প্রতিটি মিষ্টি কুমড়া খেতে সেক্স ফেরমোন ট্রাপ স্থাপন করা হবে। নিরাপদ সবজি উৎপাদনের জন কৃষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। কিভাবে নিরাপদ সবজি উৎপাদন করা হবে সে বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কৃষকদের সচেতন করে গড়ে তোলা হয়েছে। সেক্স ফেরমোন ট্রাপের পাশাপাশি বায়োপেস্টিফাইড (জৈব বালাই নাশক) ব্যবহার করে সবজি উৎপাদনে সহযোগিতা করছেন।”
তিনি জানান, কৃষক প্রতি হেক্টর জমিতে গড়ে ১২ মেট্রিক টন কুমড়ার ফলন হয়েছে। আর খরচ হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫হাজার টাকা। ফলে কৃষকরা মিষ্টিকুসড়া আবাদ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন।
কৃপ্র/এম ইসলাম