কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ পাহাড়ি ঢল আর প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তায় হু-হু করে বাড়ছে পানি ।আর এ পানি বৃদ্ধিতে মরুময় তিস্তায় ফিরে এসেছে নব যৌবন। খুলে দেয়া হয়েছে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট। ভরা বোরো মৌসুমে হঠাৎ নদীতে পানি আসায় তিস্তার দুপাড়ের কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটেছে। জানা গেছে গত রোববার সন্ধ্যার পর থেকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার তিস্তা ব্যারাজে পানি বাড়তে থাকে। রোববার রাতেই পানির পরিমান রেকর্ড করা হয় ৫১ দশমিক ০৫ সেন্টিমিট। গত পাঁচ দিনে এ নদীর পানি প্রবাহের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০০০ কিউসেকে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, শুস্ক মৌসুমে এ ধরনের পানি প্রবাহ অব্যাহত থাকলে ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেয়া যেত। পানি না থাকায় এ বছর ব্যারেজের রংপুর ও দিনাজপুর কমান্ড এরিয়া বাদ দিয়ে চাষাবাদ শুরু হয়েছে। যাতে হাজার হাজার কৃষক পানি থেকে বঞ্চিত হয়ে চাষাবাদ থেকে সরে দাড়িয়েছেন। পানি সল্পতার কারণে চলতি মৌমুমে ৮ হাজার হেক্টর জমির বোরো জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হয়েছে।
হঠাৎ পানি বৃদ্ধির ফলে বন্ধ থাকা তিস্তা ব্যারেজের কয়েকটি গেট খুলে দেয়া হয়েছে। ফলে তিস্তার ধুধু বালু চরে পানি উঠেছে। তিস্তার চরে রোপন করা ভুট্টা খেত পানিতে ভরে উঠায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে সবজিসহ মিষ্টি কুমড়া, পিয়াজ ও রসুনের খেত পানিতে ডুবে যাওয়ায় হতাশাও লক্ষ্য করা গেছে কৃষক পরিবারগুলোতে।
তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ১ সপ্তাহ আগেও ব্যারেজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ ছিল মাত্র ৬শ থেকে ৮শ কিউসেক। হঠাৎ রোববার সন্ধা থেকে পানি বেড়ে যায়। সোমবার দুপুরে পানি বেড়ে দাড়ায় ২৭০০ কিউসেক। পানি বৃদ্ধির কারন হিসেবে তিনি জানান, ব্যারেজের উজানে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ায় ভারত গজলডোবা ব্যারেজের গেট খুলে দিয়েছে।
নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ডিমলা উপজেলার ১০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত ও বহু ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা । টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন বলেন, ‘চারদিন আগে পানির অভাবে তিস্তা নদীর বুক ধুধু বালুচর ছিল।এখন উজান থেকে পানি আসায় চরখড়িবাড়ি ও পূর্বখড়িবাড়ি মৌজার আটটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ওইসব গ্রামের মরিচ, পিঁয়াজ, রসুন ও তরমুজসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।’ পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, ‘নদীর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড় সিঙ্গেরসড় ও পূর্বঝাড় সিঙ্গেরসর গ্রাম প্লাবিত হয়ে কালোজিরা, মরিচসহ বেশকিছু ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।’
কৃপ্র/এম ইসলাম