কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ শরীয়তপুর জেলায় আলুর ফলন ভাল হলেও হিমাগার না থাকায় লাভবান হতে পারছেন না কৃষকরা। শরীয়তপুর জেলার প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমি আলু আবাদের উপযোগী হওয়ায় প্রতি বছরই এখানে দেশী জাতসহ উন্নত জাতের ডায়মন্ড আলু আবাদ হয়ে থাকে। তবে শরীয়তপুরে কোন হিমাগার না থাকায় প্রায়ই কৃষক আলুর ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন। তাই জেলায় একটি হিমাগার স্থাপনের দাবি এখানকার কৃষকদের।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলায় এ মৌসুমে ২ হাজার ৮’শ ৭০ হেক্টর আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ২’শ ৯০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৭ হাজার ৮’শ মে.টন। তবে আলুর ভাল ফলন হওয়ায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।এ মৌসুমে আলু রোপনের সময় বর্ষার পানি জমি থেকে নামতে দেরী হওয়ায় ও ভারি বর্ষণের কারণে আলু আবাদে ১০-১৫ দিন বিলম্ব হয়। কিন্তু তার পরেও ফলন ভাল হওয়ায় আশায় বুক বেধে ছিলেন চাষিরা। কিন্তু মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কিছু আলু পচে নষ্ট হওয়ায় ও আশানুরুপ বাজার মূল্য না পাওয় বেশী লাভবান হতে পারছেন না কৃষকরা।
জেলার নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা, গোসাইরহাট, জাজিরা ও সদর উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে প্রতি বছরই আলু আবাদ হয়। ওই সকল অঞ্চলের জমি বেলেযুক্ত উর্বর হওয়ায় ফলনও হয় ভাল। তাই প্রতি বছরই বাড়ছে আলুর আবাদ। তবে জেলায় কোন হিমাগার না থাকায় উত্তলনের সময় ক্ষেত থেকেই আলু কম দামে বিক্রি করতে হয় কৃষকদের। ফলে আলুর ভাল ফলন ফলিয়েও বেশী লাভবান হতে পারছেন না কৃষক। এবছর প্রতি শতাংশে সাড়ে ৩ থেকে ৪ মণ আলুর ফলন পাচ্ছে কৃষক।
সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের সোনামুখী গ্রামের কৃষক জয়নাল বেপারী (৫৫) বলেন, আমাদের জমি আলু আবাদের উপযোগী হওয়ায় পূর্ব পুরুষদের ধারাবহিকতায় আমরাও প্রতিবছর আলু আবাদ করছি। প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয় না হলে প্রতি বছরই আমরা আলুর ভাল ফলন পাই। কিন্তু আমাদের জেলায় কোন হিমাগার না থাকায় আমাদের লাভের একটা বড় অংশ স্থানীয় বেপারী ও পাইকাররা নিয়ে যাওয়ায় আমাদের লাভ কম হয়। তাই জেলায় একটি হিমাগার স্থাপন করা গেলে আমরা অনেক বেশী লাভবান হতে পারতাম।
শরীয়তপুর কৃষি কম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো: কবির হোসেন বলেন, শরীয়তপুর জেলার কিছু কিছু অঞ্চলের মাটি আলু আবাদের উপযোগী হওয়ায় প্রতি বছরই এখানে আলুর আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষি বিভাগের প্রশিক্ষণ, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও কারিগরি সহযোগিতায় উন্নত পদ্ধতি ও জাত ব্যবহার করে শরীয়তপুরের চাষিরা আলুর উৎপাদন বৃদ্ধি করছেন। তবে জেলায় কোন হিমাগার না থাকায় কৃষকরা আশানুরূপ লাভবান হতে পারছেন না। জেলায় সরকারি/বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হিমাগার স্থাপন করা গেলে আলু চাষিরা অর্থনৈতিক ভাবে অনেক বেশী লাভবান হতে পারত।
সুত্রঃ বাসস/ কৃপ্র/এম ইসলাম