কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বৃষ্টি আর উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে ময়মনসিংহের প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমির বোরো ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জেলার প্রায় দুই হাজার কৃষক। ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ফুলপুর, ফুলবাড়ীয়া, ত্রিশাল ও ভালুকায় জলাবদ্ধতায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
কৃষকরা জানান, হালুয়াঘাট উপজেলার নড়াইল ইউনিয়নের বটগাছিয়াকান্দা, গোপীনগর, কাওয়ালিজান গ্রামে অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে প্রায় ৬৮৩ হেক্টর ধানি জমি। আর মাত্র ১৫ দিন পরেই এসব ফসল কৃষকের ঘরে উঠত। কিন্তু এবার আর তা হচ্ছে না। হতদরিদ্র কৃষক পরিবারগুলো এখন অনাহার-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। ভবিষ্যতে সংকট আরো বাড়বে। কৃষক আব্দুল কাদেরের সারা বছরের খোরাক আসে বোরো ধান-চাল বিক্রি থেকে। পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টিতে চলতি মৌসুমে জমির ক্ষতি হয়েছে। বছরটা কীভাবে পার করবেন, এ নিয়ে বেশ চিন্তিত তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ বলেন, ২১ হাজার ৪০০ হেক্টর কৃষিজমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। পাহাড়ি ঢল আর বর্ষণে ৬৮৩ হেক্টর জমির ধান ক্ষেত সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। ভালুকা কৃষি অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভালুকা উপজেলার মেদুয়ারী গ্রামের বগাজান, সোয়াইল, পানিবান্দা গ্রামের সাজুকুরী, নূরুঙ্গী, হাতিয়া হেয়ালমারীসহ মোট ১৫টি বিলের পানিতে তলিয়ে গেছে বোরো ক্ষেত।
উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল আজম খান জানান, এখন পর্যন্ত ভালুকায় ১ হাজার ২৫ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। সুতিয়া, খিরু, বানারসহ প্রায় প্রতিটি বিলের পানিতে ত্রিশাল উপজেলায় ৩৫০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। বেশ কয়েকটি গ্রামে বৃষ্টি না হলেও উজানের ঢলে নদীর পানি বেড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলি জমি। ময়মনসিংহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি অফিসার রিয়াজ উদ্দিন জানান, ১৩ উপজেলার মধ্যে ভালুকা, ত্রিশাল, ফুলপুর, ফুলবাড়ীয়া, মুক্তাগাছায় ও হালুয়াঘাট সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ময়মনসিংহ আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক অমিতাভ দাস বলেন, ময়মনসিংহ বিভাগে ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি নেত্রকোনা জেলায়।
কৃপ্র/এম ইসলাম