কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ টাঙ্গাইলের মধুপুর ও ঘাটাইলে পোল্ট্রি খাতে অসংখ্য বেকার যুবকের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। মধুপুর ও ঘাটাইলে ছোট-বড় মিলিয়ে ৫ হাজার ৫৩১টি পোল্ট্রি খামার রয়েছে। এর মধ্যে লেয়ার ৩ হাজার ৯০০টি এবং বয়লার খামার ৮০০টি। শুধু ঘাটাইলেই রয়েছে ৪ সহস্রাধিক খামার। ঘাটাইলের মোট জনসংখ্যার ১৪ ভাগই পোল্ট্রি খামারের সঙ্গে জড়িত। শুধু ঘাটাইল উপজেলা থেকে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২২ কোটি ডিম উৎপাদিত হয়েছে। যা ২০০৭-৮ অর্থবছরে ছিল ৪ কোটি ৯০ লাখ। গত ৮ বছরে ডিম উৎপাদনের হার বেড়েছে ৩৫০ ভাগ।
এ উপজেলার ১১ হাজার ২৫৭টি পরিবার পোল্ট্রি শিল্পের সঙ্গে নির্ভরশীল। তবে এত সংখ্যক খামারের মধ্যে নিবন্ধিত মাত্র ৪৮৪টি। মধুপুর উপজেলায় ৩৩২টি লেয়ার এবং ২৯৯টি বয়লার খামার রয়েছে। তন্মধ্যে নিবন্ধিত ৭১টি লেয়ার এবং ১৬১টি বয়লার খামার। দুই উপজেলার প্রায় সাড়ে ৫ হাজার খামারের মধ্যে নিবন্ধিত হয়েছে মোট মাত্র ৭১৬টি। বেসরকারি লেয়ার খামার নিবন্ধনে এ গ্রেডের ৫ বছরের জন্য সরকারি নিবন্ধন ফি ১৫ হাজার টাকা আর নবায়ন ফি সাড়ে ১২ হাজার টাকা। বি গ্রেডের জন্য নিবন্ধন ফি ১০ হাজার টাকা, নবায়ন ফি সাড়ে ৭ হাজার টাকা। সি গ্রেডের জন্য নিবন্ধন ফি ৫ হাজার টাকা এবং নবায়ন ফি সাড়ে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে নিবন্ধন না করায় ঘাটাইল-মধুপুরের এসব খামার থেকে সরকার প্রতি ৫ বছরে গড়ে ৫ কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
২০০৮ সালের জাতীয় পোল্ট্রি উন্নয়ন নীতিমালায় বলা হয়েছে বাণিজ্যিক খামার ঘনবসতি এলাকা এবং শহরের বাইরে স্থাপন করতে হবে। একটি বাণিজ্যিক খামার থেকে আরেকটি খামারের দূরত্ব ২০০ মিটার হতে হবে। ব্রিডিং খামারের পাস্পরিক দূরত্ব ৫ কিলোমিটার হতে হবে। গ্র্যান্ড প্যারেন্ট স্টক ও প্যারেন্ট স্টক খামারের ২ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো খামার স্থাপন করা যাবে না। খামার স্থাপনের আগে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনুমতি গ্রহণ করতে হবে। খামার বা হ্যাচারি স্থাপন পরিকল্পনায় উন্নত জীব নিরাপত্তা ব্যবস্থার উল্লেখ করতে হবে। খামার বা হ্যাচারি স্থাপন পরিকল্পনায় বর্জ্য স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে অপসারণের ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং বর্জ্য অপসারণের জন্য প্রয়োজনীয় স্থানের সংস্থানও থাকতে হবে। কিন্তু এসব শর্তের বেশির ভাগই মানছেন না খামারিরা।
মধুপুরের রংধনু পোল্ট্রি ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবু জাফর জানান, বড় খামারিরা সরকারকে সুবিধা দিচ্ছে। সরকারও তাদের সহযোগিতা করছে তবে তিনি জানান, এ এলাকার খামারিরা নীতিমালার তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র খামার স্থাপন করছেন এবং খোলা জায়গায় পোল্ট্রি বর্জ্য ফেলে পরিবেশ দূষণ করছেন। ঘাটাইলের রসুলপুর ও ধলাপাড়া ইউনিয়নের অধিকাংশ পোল্ট্রি খামারের বর্জ্য বংশাই নদীতে ফেলে দিয়ে নদীর পানিও দূষিত করছেন।
সুত্রঃ যায়যায় দিন / কৃপ্র/এম ইসলাম