কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ খরা মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে সেচ সঙ্কট। ইতোমধ্যেই চার নদী, ২৭টি বড়মাপের বিল ও সহস্রাধিক পুকুর পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। জেলার প্রায় ছয় শ’ মৌজার ২৫ হাজার হেক্টর জমির ইরি-বোরো মরতে বসেছে। বিশেষ করে পদ্মা, মহানন্দা, পাগলা ও পুনর্ভবার তলদেশের প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর ও খাল, বিল, পুকুরনির্ভর সাড়ে ১২ হাজার হেক্টর ইরি-বোরো জমি ফেটে চৌচির। কৃষকের প্রচ- ইচ্ছা থাকার পরও সেচ দিতে পারছে না।
জেলার চার নদীর তলদেশে ও ১৭০ কিলোমিটারজুড়ে পাড়ে অবস্থিত ইরি-বোরা সেচের অভাবে একেবারে মরতে বসেছে। সেচ না দিলে এ ধান চিটে হয়ে যাবে। এছাড়া অধিকাংশ গভীর ও সাধারণ নলকূপে প্রয়োজনীয় পানি আসছে না। প্রতিদিন ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাচ্ছে। বিশেষ করে মহানন্দা ও পূনর্ভবাসংলগ্ন গোমস্তাপুর, নাচোল ও সদর নিয়ে গড়ে ওঠা বরেন্দ্র ভূমিতে সেচ পাচ্ছে না। পাশাপাশি উজানের বাঁধের কারণে পদ্মার যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে চর পড়াতে চাঁপাইয়ের শিবগঞ্জ ও সদর উপজেলার ২২ কিলোমিটারজুড়ে দুই পাড়েও নদীর চরে যেসব ইরি-বোরো হয়েছিল তা এখন মরতে বসেছে।
এক সময়কার খরস্রোতা পদ্মা, মহানন্দা, পাগলা পুনর্ভবা ভরাট হয়ে হারিয়েছে নাব্য। উজানের বাঁধের কারণে শুষ্ক মৌসুমে পর্যাপ্ত পানিপ্রবাহ না থাকায় ক্ষীণ নদী ও বিশাল বিশাল চয়ের কারণে নদীর গতীপথ পরিবর্তন হয়েছে। উজানের বাঁধের কারণে ও জলবায়ুর পরিবর্তনে বার্ষিক বৃষ্টির হার কমেছে, যার কারণেই নদীগুলো পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি পানির ভূগর্ভস্থ স্তর একেবারে নেমে যাওয়ার কারণে সেচ বন্ধ হয়ে গেছে।
কোন কোন স্থানে ৮০ থেকে ৯০ আবার বরেন্দ্রর গোমস্তাপুর, নাচোল ও সদরে উদ্বেগজনক হারে নেমেছে পানির স্তর। যারা ইরি-বোরো করেছিল তারা এবার পড়েছে মহাসঙ্কটে। প্রশাসনিকভাবে পুকুর, দীঘি, নালা খননের মাধ্যমে সঙ্কট এড়াতে গিয়ে আরও বিপদে পড়েছে। ফলে নদীর তলদেশ থেকে শুরু করে পুরো বরেন্দ্রর ইরি-বোরো সেচ সুবিধার অভাবে ভয়াবহ রূপ নিতে যাচ্ছে।
সুত্রঃ জনকণ্ঠ/ কৃপ্র/এম ইসলাম