কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার ডিঙ্গাপোতা হাওড়ে মাছের মড়ক দেখা দিয়েছে। অকালবন্যা ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে যাওয়া বোরো ধানের পচনে সৃষ্ট বিষক্রিয়ায় মরে যাচ্ছে হাওড়টির বিভিন্ন জাতের মাছ। বোরো ফসল হারিয়ে এরই মধ্যে দিশেহারা এ হাওড়পাড়ের বাসিন্দারা। তার ওপর এখন মাছের মড়কে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছেন এখানকার মত্স্যজীবীরা। হাওড়ের মাছের মধ্যে বোয়াল, আইড়, রুই, কাতলা, পাবদা, মেনি, বাইম অন্যতম। এছাড়া পুঁটি, চিংড়ি, চাপিলা, টেংরা ও গোলশা মাছও রয়েছে। কিন্তু মড়কের কারণে এসব মাছের অসংখ্য রেণু মরে ভেসে উঠছে। রয়েছে ডিমওয়ালা মাছও। এছাড়া হাওড়ের কাঁকড়া, সাপ, শামুক ও ঝিনুকও মারা যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ধান পচে হাওড়ের পানি কালো হয়ে গেছে। পানির দুর্গন্ধে বাড়িঘরে টেকাও এখন দায় হয়ে পড়েছে। পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায় মাছ মরে ভেসে উঠছে। দুদিন ধরে এ মড়ক দেখা দিয়েছে। হাওড়পাড়ের বাসিন্দারা এসব মরা মাছ সংগ্রহ করছে। অনেকে আবার মরা মাছ রোদেও শুকাচ্ছে। আর এসব মাছ খেয়ে রোগের আশঙ্কা করছে অনেকে।
উপজেলা মত্স্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহ মত্স্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. খলিলুর রহমানসহ চারজনের একটি গবেষক দল ডিঙ্গাপোতা হাওড় এলাকা পরিদর্শন করেছে। ড. মো. খলিলুর রহমান জানান, হাওড়ের ধান পচে পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেছে। আর বেড়ে গেছে অ্যামোনিয়ার মাত্রা। ফলে মাছ ও জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে।
উপজেলার জ্যেষ্ঠ মত্স্য কর্মকর্তা দিলীপ কুমার সাহা জানান, জেলা মত্স্য কর্মকর্তা আশরাফ উদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি গবেষক দল ভেসে ওঠা মাছ ও হাওড়ের বিভিন্ন স্তরের পানির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। তারা এসব মরা মাছ খাওয়ার উপযোগী বলে মত দিয়েছেন। নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক ড. মুশফিকুর রহমান হাওড় এলাকা ঘুরে সাংবাদিকদের জানান, বিস্তীর্ণ এ জলাশয়ে মাছের মড়ক ঠেকাতে প্রতিষেধক প্রয়োগ সম্ভব নয়। তবে প্রয়োজনীয় সম্ভাব্য অন্যান্য ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কৃপ্র/এম ইসলাম