কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার শতাধিক যুবকের প্রধান পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে ফুল চাষ। অন্যাআন্য কৃষি কাজের সাথে ফুল চাষ করেই এখন চলছে অনেকের সংসার। জানা যায়, বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা যমুনা ও বাঙালি নদীর তীরে অবস্থিত। নদী প্রতিবছর ভাঙছে। নদী যেমন ভাঙে ঠিক তেমনি বাড়ে সর্বশান্ত মানুষের সংখ্যা। এই মানুষগুলো নিজেদের টিকিয়ে রাখতে জড়িয়ে পড়ছে কৃষি কাজের সাথে। কৃষি হিসেবে লাভজনক হওয়ায় তারা এবার ফুল চাষ শুরু করেছে। ফুল চাষ করেই এখন তারা নিজেদের ভাগ্য বদল করে ফেলেছেন। সোনাতলা উপজেলার কামারপাড়া, চামুরপাড়া, সুজায়েতপুর, রাখালগাছি ও বড়বালুয়া গ্রামে ব্যাপক আকারে ফুল চাষ হচ্ছে।
বগুড়া জেলার সোনাতলা উপজেলার চমরগাছা গ্রামের মোন্তেজার রহমান জানান, ফুল চাষ করে বেশি লাভবান হওয়া যায়। এ কারণে ফুল চাষ করা হচ্ছে। ৫০ শতক জমিতে এবার ফুলের চাষ করেছেন তিনি। ওই জমি থেকে এবার প্রায় আড়াই লাখ টাকা আয় করবেন বলে তিনি আশা করছেন। একই গ্রামের নূরে আলম শিলু তার ২০ শতক জমিতে গ্লাডিওলাস, রজনী গন্ধা ও গাঁদা ফুলের চাষ করেছেন। একইভাবে সুজাইতপুর গ্রামের শাকিলুজ্জামান তার ৩০ শতক জমিতে গত কয়েক বছর ধরে ফুল চাষ করছেন। সে আয় দিয়ে নিজের সংসার পরিচালনা করছেন। এছাড়া বামুনিয়া ও নগর পাড়ার অনেক কৃষক ও বেকার যুবক ফুল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
কৃষি বিভাগ ও কৃষি কর্মকর্তাগণ তাদেরকে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে ফুলচাষীদের গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা ও গাঁদা ফুলের চাষ বেশি করতে দেখা গেছে। আবার কিছু কিছু এলাকায় ভ্রাম্যমান ফুল বিক্রেতারা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মূল ফটকে ভ্যানযোগে ফুলের চারা ও ফুল বিক্রি করছেন।
সোনাতলা উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের তুহিন মিয়া (২৫) সুখানপুকুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ফটকে ফুল বিক্রিকালে জানান, তাদের অভাবী সংসারে ১০/১১ বছর আগে তার পিতার অকাল মৃত্যু ঘটে। সেই থেকে সংসারের হাল ধরেছেন তিনি। পরিবারে মা ও ছোট দুইবোন- জেসমিন ও জনি। ওরা দুই জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। বাড়ির ২/৩ শতক জমি ছাড়া জায়গা-জমি নেই তার। সারাবছর ফুল বিক্রি করে সংসার চলে। ফুলচাষীরা জানান, ফুল চাষে উৎপাদন খরচ কম, লাভ বেশি। তাই দিনদিন সোনাতলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষক অন্য ফসলের চেয়ে ফুল চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। সোনাতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন সরদার জানান, উপজেলায় ফুল চাষের হার বাড়ছে। বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ হচ্ছে।
কৃপ্র/এম ইসলাম