ড. মোঃ শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া:
“ফুলদানিতে ভরেছে ফুল
বজায় রেখে মাত্রা-রেখা-রঙ-মমতা
তাই এনেছে রূপ বারতা
অনিন্দ্য -অতুল”
ফুল আমাদের চোখে পড়ে। কত কত রকমের ফুল আবার আমরা যত্ন করে বাগানে লাগাই। আমাদের আকাক্সক্ষা থাকে আমাদের পরম যত্নের ফুল যেন বাগানেই শোভা পায়। কেউ যেন ফুল না ছিঁড়ে নিয়ে যায় তার জন্য একটা উৎকন্ঠাও থাকে আমাদের মনে। এসবই সত্যি, আবার এটিও সত্যি যে আমরাই বাগান থেকে ফুল তুলে এনে উপহার দিই প্রিয়জনদের। নিজের যত্নে গড়ে তোলা বাগান থেকে প্রিয়জনদের ফুল উপহার দিতে পারার আনন্দই অন্য রকম। কেবল উপহার দেওয়া কেন, কত কারণেইনা আমাদের ফুলের প্রয়োজন হয়। ফুলের বহুমাত্রিক ব্যবহার বৃদ্ধি পাবার কারণেই না অধিক ফুল উৎপাদনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। আর কেবল সৌখিন বাগান নয়, রীতিমত ঘটা করে শুরু হয়েছে ফুল আবাদ। দিনে দিনে শুরু হয়েছে ফুলের বাণিজ্যিক আবাদ। আসল লক্ষ্য ফুলপ্রেমীদের কাছে নানা রকম ফুলকে সহজলভ্য করে দেওয়া। আকাক্সক্ষার ফুলটি যেন পুষ্প প্রেমীরা হাতের কাছে পায় সে ব্যবস্থা করা।
মানুষের সাথে ফুলের সম্পর্ক কতদিনের তা হিসেব করে বলা বেশ কঠিন। স্মরণাতীত কাল থেকেই ফুল আর মানব জাতির মধ্যে একটি সম্পর্ক রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ফুল হলো শান্তি আর ভালোবাসার প্রতীক। নানা রকম উৎসব, সামাজিক, পারিবারিক ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানাদিতে এবং ধর্মীয় কাজে ফুল ব্যবহৃত হয়। কাটা ফুল ঘরের নান্দনিক শোভা বৃদ্ধি করে। জটিল ও নিরানন্দময় জীবনে কাটা ফুল হলো মনের ভাড় মুক্ত করার এক বড় উপায়। কাটা ফুল মনকে সতেজ করে তোলে। সে কারণেই কাটা ফুলের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
কাটা ফুল মানে গাছ থেকে বিযুক্ত করা ফুল বা ফুলের কুঁড়ি কিংবা ফুলের মঞ্জুরী। গৃহ সজ্জা, ফুলদানি সাজানো বা মালা তৈরি করা ছাড়াও আরও বহু প্রয়োজনে লাগে কাটা ফুল। এদের যেমন শখের বাগান থেকে সংগ্রহ করা যায়, তেমনি তা সংগ্রহ করা যায় বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে চাষাবাদ করা ফুলের মাঠ থেকেও। এমনকি বুনো ফুল গাছ থেকেও বুনো ফুল সংগ্রহ করা যায় কাটা ফুল হিসেবে। কাটা ফুলের ব্যবহার এক সুপ্রাচীন ঘটনা। যদিও এর ব্যাপকতা বৃদ্ধি পেয়েছে আমাদের দেশে গত এক দেড় দশক ধরে। চাইলেই এখন দোকান থেকে কাটা ফুল সংগ্রহ করা যায়। দেশী বিদেশী নানা রকম ফুল আছে এখন আমাদের ফুল বিতানগুলোতে।
জারবেরা
সব ফুলই কাটা ফুল হিসেবে ব্যবহার করা যায় না। কাটা ফুলকে অবশ্যই সুন্দর ও আবেদনময়ী হতে হয়। কাটা ফুলের সুমিষ্ট গন্ধ থাকলেতো আর কথাই নেই। কাটা ফুলের দন্ডটি লম্বা থাকতে হয় আর এদের তুলনামূলকভাবে লম্বা সময় সজীব থাকার গুণাবলী থাকতে হয়। কাটা ফুলের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুল হলো গোলাপ। এর রূপ মাধুর্য্য আর এর সজীব থাকার বাড়তি ক্ষমতা একে এই মর্যাদায় নিয়ে গেছে। ফুলের বাজারে কার্ণেশন, জারবেরা, চন্দ্র মল্লিকার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। অবশ্য পুষ্প প্রেমিকদের কাছে টিউলিপ, গ্লাডিওলাস, লিলি ইত্যাদি ফুলও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাছাড়া রজনীগন্ধা, পপি, অর্কিড, নার্গিসাস, আইরিশ, ডালিয়া, ডেইজি এসব ফুলেরও কাটা ফুল হিসেবে বেশ সুনাম রয়েছে।
গ্লাডিওলাস
জীবিত কেটে নেওয়া ফুলের জীবন কাল বড় সীমিত। গাছ থেকে ফুল বা ফুল মঞ্জুরী বিযুক্ত করা মানে এদেরকে পানি অর্থাৎ গাছের মূল তথা পরিবহন টিস্যু থেকে বিযুক্ত করা। ফলে পানির পরশ না পেলে দ্রুতই এদের ঢলে পড়াটাই স্বাভাবিক। প্রস্বেদন হবে অথচ পানির প্রবাহ থাকবেনা এরকম পরিস্থিতিতে যতœ না নিলে ফুলের ঢলে পড়া ছাড়া কোন গত্যন্তর থাকে না। কাটা ফুলকে তাই দ্রুত পানির সংস্পর্শে নিয়ে আসতে হয়। বিলম্ব ঘটলে পানি পরিবহনের টিস্যুতে দ্রুত স্থান করে নেয় বায়ু এবং কোষের কর্মকান্ড অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়ে। বিলম্ব না করে পানি ভর্তি পাত্রে কাটা ফুল রাখলেই শুরু হয়ে যায় আবার পানির প্রবাহ। প্রস্বেদনের সাথে রক্ষা হয় ভেতরের পানির সাম্যতা। কেবল পানি থেকে নয় কাটা ফুল বিযুক্ত হয় খাদ্য সরবরাহের উৎস থেকেও। যদিও ফুল বা পুষ্প মঞ্জুরীর সাথে থেকে যাওয়া পাতা কিছু খাদ্য তৈরি করে বটে, তবে একবার গৃহের ভেতর নিয়ে আসলে কাটা ফুল আর আলোর সংস্পর্শে থাকে না বলে শর্করা তৈরিরও সুযোগ এক সময় বন্ধ হয়ে যায়।
ফুলদানিতে আমরা ফুল সাজাই। ফুল সাজানো হয় ফুলদানিতে গৃহে কিংবা অফিস আদালতে। স্বচ্ছল মানুষ ফুল সাজিয়ে রাখতে চায় প্রতি ঘরে ঘরে। এর জন্য নানা রকম ফুলও বাছাই করে নেয় মানুষ। ফুলদানিতে সাজানোর ফুলতো আসলে উত্তম কাটা ফুলই। ফুলদানিতে সাজিয়ে রাখার ফুলের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকতে হয়। খানিকটা শক্ত লম্বা বোটায় ফোটে থাকা ফুল বা পুষ্প মঞ্জুরী কাটা ফুলের জন্য অতি উত্তম। ফোটা একক ফুলের চেয়ে লম্বা বোঁটায় থাকা নানা স্তরে বিদ্যমান ফোটা আর না ফোটা ফুলের গুচ্ছই মানুষ অধিক পছন্দ করে। এদের কোনটা এখন ফুটেছে তো কোনটা ফুটবে কাল আবার কোন কোনটা ফুটবে পরশু দিন। অর্থাৎ কিনা ফুলদানিতে একাধিক দিন ধরে ফুটতে থাকবে ফুল সেটিই আমরা বেশি পছন্দ করি।
কাটা ফুলের আর একটি বৈশিষ্ট্য হলো এদের গন্ধময়তা। ফুলগুলো যদি সুগন্ধবাহী হয় তাহলেতো তা হয়ে ওঠে পরম আরাধ্য ধন। সারা ঘরময় বয়ে যায় এর সুবাতাস, মন আমোদিত হয়ে ওঠে। তাতে কাজের স্পৃহাই অনেক বেড়ে যায়। কাটা ফুলের আর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো খানিকটা দীর্ঘ সময় এদের ফুলের সতেজতা সংরক্ষণ করার ক্ষমতা। কোন কোন ফুলের সতেজ থাকার কিছুটা স্বভাব বংশাণুক্রমিকভাবেই থাকে। কাটা ফুলের বংশাণুক্রমিক এই গুণাগুণের ওপরই কেবল নির্ভর করে খুশি নন পুষ্প প্রেমীরা। তারা চান নানা কৌশলে ফুলদানীতে সাজানো ফুলগুলোর সতেজতা ধরে রাখতে আরও কিছু বেশি দিন। এর জন্য বেশ কিছু গবেষণাও কিন্তু হয়েছে। সাফল্যও তাতে অনেকটা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
কাটা ফুল সতেজ রাখার অনেক কৌশল এখন পুষ্প প্রেমীদের হাতে রয়েছে। পানিতে কাটা ফুল রাখার আগে ফুলবাহী কান্ডের গোড়াটকে কাটতে হয় তির্যকভাবে ২.৫ সে.মি. জায়গা জুড়ে। এরকম কাটার উদ্দেশ্য হলো পানি টেনে তোলার পৃষ্ঠটাকে যথা সম্ভব বড় করে পাওয়া। থেতলে যাওয়া বা ভাঙ্গা কান্ডের পানি উত্তোলন ক্ষমতা অনেকটাই কমে যায়। পানিতে ডুবন্ত অবস্থায় কান্ডটি তির্যক ভঙ্গিতে কেটে নিলে উত্তম হয় এ কারণে যে তাতে ফাঁকা জায়গা পেয়ে বায়ুর কান্ডে ঢুকে পড়াটা রহিত হয়। অতিরিক্ত পাতা থাকলে সেগুলো সরিয়ে দিতে হয় প্রস্বেদনের হারটা কমিয়ে আনার জন্য। পানিতে ডুবন্ত কান্ডের সাথে যেন কোন পাতা লেগে না থাকে সেটি ভাল করে লক্ষ্য রাখতে হয়। পানির স্পর্শ পেয়ে নইলে পাতা পঁচে গিয়ে দুর্গন্ধ ছড়াবে আর ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
ফুলের শাখা বা মঞ্জুরীকে যথাসম্ভব ভোর বেলা বা সন্ধ্যায় সংগ্রহ করে নিতে পারলে ভাল হয়। শাখা বা পুষ্পমঞ্জুরীর স্বাভাবিক অবস্থায় পেতে হলে ব্যবহারের আগে গভীর পানিতে কমপক্ষে তিন ঘন্টা ডুবিয়ে রাখতে পারলে উত্তম হয়। অনেক ফুলের সজিবতা রক্ষার জন্য একটুখানি উষ্ণ পানিতে রাখা মন্দ নয়। গরম পানির ভেতরে ফুল দন্ড বা শাখা প্রায় এক ইঞ্চি মত কেটে দিয়ে ১০-১৫ সেকেন্ড রেখে দেবার পর তা গভীর পানিতে ডুবিয়ে দিলে ভাল হয়। মোটা মোটা বা কাষ্টল কান্ডের ক্ষেত্রে আর একটু বেশি সময় ধরে উষ্ণ পানিতে রাখা উত্তম। গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা, পপি এবং আরো অনেক ফুলের শাখা এ ধরনের ব্যবস্থা পছন্দ করে। যেসব ফুলের কান্ড বেশ নরম যেমন- লিলি, রজনীগন্ধা, গ্লাডিওলাস এসব ফুলের শাখা অগভীর পাত্রে সাজানোই উত্তম। পদ্মফুল, ফুলদানীতে সাজানোর আগে এদের ফাঁকা কান্ড সিরিঞ্জের মাধ্যমে পানি পূর্ণ করে নিয়ে গোড়ায় তুলা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া অতি উত্তম।
ফুলদানিতে পানি দেওয়া আর ফুলের খাদ্য সরবরাহ করা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাজারে কোন কোন দোকানে আজকাল জীবাণুমুক্ত ফুলের খাদ্যও পাওয়া যায়। বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার যোগ্য কাটা ফুলের খাদ্য আসলে সূক্রোজ, অম্লীয়ভাব সৃষ্টিকারী বস্তু, অণুজীব অবদমনকারী উপাদান এবং এক রকম শ্বসনরোধী উপকরণের মিশ্রণ। সূক্রোজ এখানে পাতা হারানোর কারণে সৃষ্ট শক্তির ঘাটতি মেটাতে কাজ করে, ফুলের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে এবং ফুলকে সতেজ রাখে। অধিকাংশ পানির উৎস ক্ষারধর্মী এবং এরা কাটা ফুলের জীবন সংক্ষিপ্ত করে দেয়। অম্লীয়ভাব সৃষ্টিকারী পদার্থ পানির পিএইচ টাকে অম্লীয় ভাবাপন্ন করে। এর ফলে ফুলের রঞ্জক পদার্থ ও এর বর্ণ সংরক্ষিত হয়। অণুজীবের বৃদ্ধি রহিতকরণ পদার্থ সংযোগ রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকরেরিয়া এবং ছত্রাকের আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে কাটা ফুলের কর্তিত কান্ডকে। নাইলে পানি প্রবাহকারী টিস্যুর কোষগুলো বন্ধ করে দিতে পারে এসব অণুজীব।
আর একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাটা ফুলকে সতেজ রাখার উপায় খুঁজে পেয়েছে বিজ্ঞানীরা। সতেজ কেটে আনা ফুলের কান্ডকে ১১০০ ফারেনহাইট বা ৪৩.৫০ সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পানিতে ডুবিয়ে দিয়ে এতে ফুলের খাদ্যের অন্যান্য উপাদান সমৃদ্ধ সংরক্ষক দ্রব্য যোগ করে দেওয়া হয়। অতঃপর একটি ঠান্ডা স্থানে একে রেখে দেওয়া হয় এক বা দুই ঘন্টা। এ সময় সবচেয়ে বেশি পানির প্রবাহ ঘটে কান্ডের ভেতর। আর ঠান্ডা পরিবেশে ফুলের পানি নিঃসরণ কিছুটা কমে যায়। ফুল সতেজ রাখার এই কৌশলটি মন্দ নয়।
কোন কোন ফুল গাছ থেকে বিযুক্ত করলে এদের কর্তিত কান্ডের লেটেক্স কান্ড দিয়ে পানির উড়ে যাওয়াকে অনেকটাই হ্রাস করে দেয় বটে, তবে তা বন্ধ করে দেয় পানিতে ডুবিয়ে রাখা ফুল বা ফুলমঞ্জুরীর পানি গ্রহণ ক্ষমতা। এসব ফুলের লেটেক্সের সমস্যা কাটিয়ে উঠার জন্য কান্ডের গোড়ার শীর্ষ দেশকে (আধা ইঞ্চি) ফুটন্ত পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হয় প্রায় ৩০ মিনিটের জন্য। এতে লেটেক্সের প্রতিবন্ধকতা দূর হয়। এমনিতে লেটেক্স শক্তির উৎস হিসেবে সূক্রোজ দিয়ে থাকে আর ফলশ্র“তিতে ফুলের জীবন কালকে প্রলম্বিত করে। কাটা ফুল সতেজ রাখার খাদ্য চাইলে নিজেও তৈরি করা সম্ভব। এর জন্য বেশ কয়েকটি রেসিপিই ব্যবহার করা যেতে পারে।
রেসিপি ১ : দুই কাপ হালকা পানীয় (স্প্রাইট বা সেভেন আপ), ১/২ চামচ বাসায় ব্যবহারের ক্লোরিন ব্লিচিং, ২ কাপ গরম পানি।
রেসিপি ২ : দুই চা চামচ তাজা লেবুর রস, ১ চা চামচ চিনি, ১/২ চামচ ক্লোরিন ব্লিচিং, ২ কাপ গরম পানি।
রেসিপি ৩ : দুই চা চামচ সাদা ভিনেগার, ২ চা চামচ চিনি, ১/২ চা চামচ ক্লোরিন ব্লিচিং, ২ কাপ গরম পানি।
এই সবগুলো রেসিপিতেই শক্তির উৎস হিসেবে রয়েছে চিনি। আর সাইট্রিক এসিড প্রয়োগ সেখানে অম্লধর্মী অবস্থা সৃষ্টি করে থাকে। অম্লীয় পানি কাটা কান্ড দিয়ে দ্রুত চলাচল করতে পারে। একদিকে প্রস্বেদন আরেক দিকে বাষ্পীভবন এই দুই কারণেই দ্রুত ফুলদানির পানি হ্রাস পায় বলে এটি পূরণ করতে হয় নিয়মিত পানির মাত্রা পর্যবেক্ষণ করে। কিছূতেই কান্ডের কাটা অংশটি যেন পানির উপরে ওঠে না আসে সেটিও ভাল করে লক্ষ্য রাখতে হয় বৈকি।
কাটা ফুল কোথায় রাখা হবে সেটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হালকা আলো আর ঠান্ডা স্থানে ফুলদানি বা সজ্জিত ফুল রাখাই উত্তম। সরাসরি সূর্যালোক, হিটারের আশে পাশে, এয়ার কন্ডিশনারের পাশে কিংবা কোন অতি শুষ্ক স্থানে এদের কিছুতেই রাখা ঠিক নয়। এমনকি ফুলকে কখনও পাকা ফল আর সবজির পাশে রাখতে নেই কারণ তাহলে পাকা ফল বা সবজি থেকে নিঃসৃত ইথাইলিন এদের নষ্ট হবার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে। কোন ফুল বা পাতা নষ্ট হলে এদের দ্রুত সরিয়ে দিতে হয় যেন তাজা অন্য ফুলকে তা আক্রান্ত করতে না পারে।
কাটা ফুলের কান্ড ডুবিয়ে রাখা পানি বেশ ঘন ঘন পাল্টানোই ভাল। তাছাড়া কান্ডের গোড়া বার বার তির্যক ভাবে কেটে দিতে পারলে আরো ভাল হয়। তাতে কান্ডে পানির প্রবাহ বজায় থাকে। পানিতে বাড়তি খাদ্য না দিলে প্রতি দু’দিন অন্তর অন্তর পানি বদলাতে হয় আর কান্ডটাও কেটে দিতে হয়। তাতে করে ফুল কিছুটা বাড়তি সময় সতেজ থাকার সুযোগ পায়। সঠিক প্রজাতির কাটা ফুল আর বাড়তি কিছু যত্নাআত্তি কাটা ফুলকে বেশি দিন সতেজ রাখতে সক্ষম।
প্রফেসর, কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ এবং প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা-১২০৭।
কৃপ্র/এম ইসলাম