কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ ভেড়ার ভ্রূণ উৎপাদন, সংরক্ষণ, হিমায়িত ভ্রুণ প্রতিস্থাপন ও বাচ্চা উৎপাদনে সফলতা পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) গবেষকরা। ভ্রুণ থেকে ভেড়ার বাচ্চা উত্পাদন বাংলাদেশে এই প্রথম হয়েছে বলে দাবি করছেন গবেষকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ অ্যানিমেল ফার্মে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ সাফল্যের কথা জানান প্রকল্পের প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. নাছরিন সুলতানা জুয়েনা। এছাড়া প্রকল্পের সহকারী পরিচালক ছিলেন অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমীন বারী এবং সহযোগী ছিলেন পিএইচডি ফেলো মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদারসহ দু’জন পিএইচডি গবেষক ও কয়েকজন মাস্টার্স শিক্ষার্থী।
ড. নাছরিন সুলতানা বলেন, ১১টি ভেড়ার ২২টি হিমায়িত ভ্রূণ এবং চারটি গাভীতে ৮টি হিমায়িত ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। দীর্ঘ আড়াই বছরের গবেষণার পর গত মঙ্গলবার হিমায়িত ভ্রূণ প্রতিস্থাপিত ১১টির মধ্যে একটি ভেড়ি দুটি সুস্থ শাবক জন্ম দিয়েছে। শাবক দুটির নাম দেওয়া হয়েছে বাউ-ভি আশা ও বাউ-ভি উত্স।
কম সময়ে উচ্চগুণসম্পন্ন অধিকসংখ্যক গবাদি প্রাণির বাচ্চা উতপাদনের জন্য ২০১৪ সালে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের হেকেপ প্রজেক্টের মাধ্যমে এই গবেষণা শুরু হয়। সাধারণ নিয়মে প্রতিটি ভেড়ি বছরে সর্বোচ্চ ৪টি এবং গাভী বছরে ১টির মতো বাচ্চা প্রসব করতে পারে। কিন্তু প্রযুক্তির উত্কর্ষতায় একটি নির্বাচিত উন্নত জাতের ভেড়ি ও গাভী থেকে সুপার ওভুলেশনের মাধ্যমে বছরে ২৫ থেকে ৩০টি উচ্চগুণসম্পন্ন ভ্রুণ উত্পাদন করা সম্ভব। এর মাধ্যমে প্রথমবারেই ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করে সাধারণ জাতের ভেড়ি হতে উন্নত জাতের শাবক উত্পাদন করা যেতে পারে। এতে একজন খামারি অতি অল্পসময়ে গবাদিপ্রাণির জাত উন্নয়ন করতে পারবেন।
প্রকল্পের ডেপুটি প্রধান গবেষক ড. ফরিদা ইয়াসমিন বারী বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো এখানে গবাদিপ্রাণির ভ্রূণ সংরক্ষণ ও প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। এতে কৃষকরা প্রয়োজনমতো ভ্রূণ সংগ্রহ করে তা প্রতিস্থাপন করে মানসম্মত প্রজনন নিশ্চিত করতে পারবেন। এছাড়া বাকৃবি’র ভেটেরিনারি বিভাগে স্থায়ী সিমেন ও ভ্রূণব্যাংক তৈরি করা হবে।
কৃপ্র/এম ইসলাম