কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারণে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর মাওয়া অংশ এবং নদীশাসন কাজ ঝুঁকির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এছাড়া মাওয়া, কান্দিপাড়া ও যশলদিয়া এলাকাটি হুমকির মুখে রয়েছে। এ এলাকার সরকারী- বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা নিয়েও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। খবর জনকণ্ঠ অনলাইনের।
এর আগেও এ এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দেয়। সেই ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পেলেও এ অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনে আসন্ন বর্ষা নিয়ে ভাবিয়ে তুলেছে এলাকাবাসীকে। কিন্তু বালু লুটেরাদের নাম প্রকাশে ভয় পাচ্ছে মাওয়া, কান্দিপাড়া ও যশলদিয়া গ্রামের মানুষ। সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা ওই তিন গ্রামের ১০ বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে কথা বললে তাদের ৮ জনই নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে বিভিন্ন তথ্য দিয়েছেন।
এ বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতরা হলেন লৌহজং উপজেলার মেদেনীম-ল ইউনিয়নের চার সদস্য যথাক্রমে, আক্কাস, সিরাজ, হারুন ও পার্শ্ববর্তী ভাগ্যকূল ইউনিয়নের সদস্য কালাম। এছাড়া রয়েছে আসাদ মোল্লা, মাসুদ, আবুল মাদবর ও আবুল মোল্লা। তাদের সঙ্গে এক ইউপি চেয়ারম্যানের নামও রয়েছে। প্রায় এক মাস পদ্মা সেতু এলাকা ঘুরে জানা গেছে, মাওয়া পদ্মা সেতু এলাকা থেকে আনুমানিক দেড় কিলোমিটার এবং মাওয়ার পুরান ফেরিঘাট থেকে এক কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত দক্ষিণ যশলদিয়া-চাইরপাড়া চরের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে প্রতিদিন উল্লিখিত চক্রটি ছয়টি ড্রেজারের মাধ্যমে বালু কেটে মেদেনীম-ল ও ভাগ্যকূল ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করছে।
পদ্মা নদীর তীরবর্তী মাওয়ার পশ্চিম দিক থেকে উত্তর যশলদিয়া পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এলাকায় ছয়টি ড্রেজার দিয়ে ওই চর থেকে বালু উত্তোলন করে মেদিনীম-ল ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় পাইপ বসিয়ে বালু বিক্রি করছে এ চক্রটি।
এ প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। অথচ এ চরটি থেকে বালু মাটি কাটা অব্যাহত থাকলে পদ্মার করাল গ্রাসে মেদেনীম-ল ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকা বিলীন হয়ে যাবে নিঃসন্দেহে। আর এ এলাকা বিলীন হলে সর্ববৃহৎ প্রকল্প ‘স্বপ্নের পদ্মা সেতু’ পড়বে ভয়াবহ ঝুঁকির মুখে। সেই সঙ্গে বিলীন হয়ে যাবে কয়েকটি গ্রাম-জনপদ। ফলে আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ যশলদিয়া-চাইরপাড়া চরের কারণে পদ্মা তীরবর্তী মাওয়া, কান্দিপাড়া, যশলদিয়া, কবুতরখোলা ও চাইরপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা নিজেদের আপাত নিরাপদ ভেবেছিলেন। নির্মাণাধীন পদ্মা সেতু এলাকা থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরত্বে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করা হলে পদ্মা সেতু এবং নদীশাসনের ওপর কোন প্রভাব পড়বে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (নদীশাসন) শারফুল ইসলাম জানান, উল্লিখিত এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করা হলে মাওয়াবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
কৃপ্র/এম ইসলাম