কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বেগুনবাড়ি ও কান্দাপাড়া এলাকায় ইট ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় পুড়ে গেছে অর্ধশত বিঘা জমির বোরো ধান। এতে ফসল হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে ওই এলাকার কৃষকরা। প্রতিকারের দাবিতে তারা ইট ভাটার মালিক আর স্থানীয় প্রভাবশালীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার শাহবাজপুর ও কান্দাপাড়া গ্রামের কৃষকরা সফলভাবে বোরো ধান চাষ করে। কৃষকদের চোখে-মুখে স্বপ্ন ছিল বাম্পার ফলনের। কিন্তু ইট ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় ফুলন্ত ধান পুড়ে গেছে। ধোঁয়া যতদূর পর্যন্ত গেছে ততদূর পর্যন্ত বোরো ধান বিনষ্ট হয়েছে। তাতে অর্ধশতাধিক বিঘা জমি আক্রান্ত হয়েছে। হঠাত্ ইট ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় ফুলন্ত বোরো ধান পুড়ে যাওয়ায় কৃষকের চোখে-মুখে অন্ধকার নেমে আসে। অধিকাংশ জমির এক মুঠো ধানও ঘরে উঠবে না।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, প্রতি বিঘা জমি চাষ করতে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। মৌসুমে প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ মণ বোরো ধান উত্পাদন হয়। কিন্তু অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দুটি ইট ভাটার কারণে তিন বছর যাবত্ কোনো ধান ঘরে নিতে পারছেন না কৃষকেরা। অবৈধভাবে কৃষি জমির উপর গড়ে ওঠা ইট ভাটার মালিক পক্ষ থেকে গত বছর ফসলের ক্ষতিপূরণ বাবদ বিঘা প্রতি সাত থেকে ১০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের এ বছর আর কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না বলে ভাটা মালিকের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কান্দাপাড়া গ্রামের অসহায় কৃষক ভজন চন্দ্র দাস বলেন, ‘অবৈধ ইট ভাটার ধোঁয়ায় আমার ২০ শতাংশ জমির বোরো ধান সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। গত বছর কিছু টাকা দিলেও এ বছর আর কোনো ক্ষতিপূরণ দিবে না বলে ভাটা মালিকের পক্ষ থেকে আমাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা কোনো ক্ষতিপূরণ চাই না। আমরা আমাদের জমিতে ভালোভাবে চাষাবাদ করতে চাই। তিনি অবৈধ ইট ভাটা বন্ধ করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমি ইট ভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জমি ইতোমধ্যেই পরিদর্শন করেছি। আইনগতভাবে কৃষি জমির উপর ইট ভাটা নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ প্রদান ও কৃষি জমির উপর অবৈধভাবে গড়ে উঠা ইট ভাটা বন্ধের দাবি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমি ক্ষতিয়ে দেখবো। তদন্তে প্রমাণ পেলে কৃষি জমি রক্ষায় দায়ী ইট ভাটার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সুত্রঃ ইত্তেফাক/ কৃপ্র/এম ইসলাম