কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসে জনগণকে স্বতঃস্ফূর্ত ও সচেতন করতে গণমাধ্যমের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। আগামীকাল থেকে ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য তিন দিনব্যাপী ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস বিষয়ে এশিয়া-প্যাসিফিক ব্রডকাস্টিং ইউনিয়নের (এবিইউ) তৃতীয় গণমাধ্যম সম্মেলন’ উপলক্ষে আজ এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এ কথা বলেন। সকালে তথ্য অধিদফতর সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে তথ্য সচিব মরতুজা আহমদ, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক এস এম হারুণ-অর-রশীদ, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক নাসিরউদ্দিন আহমেদ ও প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন নাহার বক্তৃতা করেন।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত রাজধানীর প্যান-প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে আগামীকাল সকাল ১০টায় তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। এবিইউ’র সাথে বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতার যৌথভাবে এ সম্মেলন আয়োজন করছে। সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য ‘সবার জন্য তথ্য : জীবন বাঁচাতে গণমাধ্যম’ নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, গবেষকদের অভিমত- জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার কাজ দুর্যোগ ঝুঁকি কমাতেও কার্যকর ভূমিকা রাখবে। তবে সেই সাথে প্রয়োজন জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত ও সচেতন অংশগ্রহণ। আর এখানেই সম্প্রচার মাধ্যম তথা গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিহার্য বলে তিনি উল্লেখ করেন।
জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক সমস্যা, যা কোনো একটি দেশের পক্ষে একা সমাধান করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে ইনু বলেন, এ জন্য প্রয়োজন স্থানীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক-এ তিন ধাপের কার্যক্রম। আর সে লক্ষ্যেই আগামীকাল থেকে ঢাকায় এ সম্মেলন শুরু হচ্ছে। তিনি বলেন, এতে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত অর্ধশতাধিক পরিবেশবিদ, গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞ, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিনিধির সাথে দেশীয় দুই শতাধিক অংশগ্রহণকারীদের সমন্বয়ে ৮টি অধিবেশন পরিচালিত হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ অধিবেশনগুলোর বিষয়বস্তু ও বর্তমান প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় নিয়ে দেশী-বিদেশী বিশেষজ্ঞদের আলোচনার মাধ্যমে ‘কী করণীয়’ তা তুলে ধরে ‘ঢাকা ঘোষণা’ প্রণয়ন করা হবে। তিনি বলেন, এই ‘ঢাকা ঘোষণা’কে মেক্সিকোর কানকুনে আসন্ন জাতিসংঘের দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস বিষয়ক বিশ্ব সম্মেলনে এজেন্ডাভূক্তির জন্য পাঠানো হবে। তৃতীয় এবিইউ গণমাধ্যম সম্মেলনে উদ্বোধনী ও সমাপনী অধিবেশনের পাশাপাশি যে ৮টি অধিবেশন পরিচালিত হবে, তার মধ্যে প্রথম দিনের অধিবেশনগুলোর মূল বিষয় হবে জলবায়ু পরিবর্তন ও দ্বিতীয় দিনের মূল বিষয় থাকবে দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস ও প্রস্তুতি।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে শেখ হাসিনার সরকার যে সুদূর প্রসারী কার্যক্রম হাতে নিয়েছে, তার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতেও বিশ্ব দ্বিধা করেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৫ সালে পরিবেশ বিষয়ে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এ সম্মাননা ‘চ্যাম্পিয়নস অব দি আর্থ’ বাংলাদেশ অর্জন করেছে। আর এ সম্মেলন বাংলাদেশে হওয়ার এটিও একটি কারণ।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এ মুহূর্তে তিনটি বড় যুদ্ধের ভেতরে রয়েছে। সে যুদ্ধগুলো হলো- টেকসই উন্নয়ন অর্জনের যুদ্ধ, জঙ্গিবাদ নির্মূলের যুদ্ধ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার যুদ্ধ। প্রতিটি যুদ্ধক্ষেত্রেই সরকারের আন্তরিকতার পাশাপাশি গণমাধ্যম সরকারের সাথে রয়েছে এবং আগামীতেও থাকবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, এ সম্মেলনে বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যম, জলবায়ু, পরিবেশ, দুর্যোগ মোকাবিলা বিষয়ে বিশেষজ্ঞগণ একসাথে বসে মানুষের জীবনরক্ষায় গণমাধ্যমের যে নতুন ভূমিকা নির্ধারণ করবেন, তা আমাদের উপকূলীয় এলাকার মানুষের জন্য নিয়ে আসবে নূতন অভিজ্ঞতা ও সমৃদ্ধকর পাথেয়। তিনি বলেন, এর ফলে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশ তার গণমাধ্যমকে সাথে নিয়ে আরেকধাপ এগিয়ে যাবে।
সুত্রঃ বাসস/ কৃপ্র/এম ইসলাম