কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ শেরপুরের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড় এলাকার পতিত জমিতে ঔষধি ও ফলদ গাছের মিশ্র বাগান করে আশা জাগিয়েছেন আদিবাসীরা। অনাবাদি আড়াই একর জমিতে প্রায় ৪ লাখ টাকা খরচ করে বছরে প্রায় ১০ লাখ টাকা আয়ের উৎস তৈরি করেছেন আদিবাসী সমাজকর্মী প্রাঞ্জল সাংমা। একইসঙ্গে এলাকার বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের পথও তৈরি হয়েছে ওই মিশ্র বাগানে।
শ্রীবরদী উপজেলার পাকা সড়ক ও বিদ্যুৎহীন প্রত্যন্ত গ্রামের আদিবাসী সংগঠন শ্রীবরদী উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সমাজকর্মী প্রাঞ্জল সাংমা। তার নিজস্ব অনাবাদি ও পতিত আড়াই একর জমির আগাছা ও জঙ্গল পরিষ্কার করে প্রথমে ২০১৫ সালে ২০০ আম্রপালি, ২০০ চায়না হাইব্রিড লিচু, ৬০০ সুপারি, ৩০০ লটকন এবং সামান্য কিছু আনারসের চারা রোপণ করেন। মাত্র এক বছরের মাথায় সাফল্য আসে বাগান থেকে। যা তাকে প্রেরণা যোগায় ফলদ বাগানে মিশ্র ঔষধি ও সবজি বাগান করার।
প্রাঞ্জল সাংমা ২০১৬ সালের শেষের দিকে ফলদ গাছের ফাঁকে ফাঁকে ২০ হাজার শতমূল এবং ২০ হাজার অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীর চারা রোপণ করেন। পাশাপাশি হলুদ-আদাসহ সামান্য কিছু সবজির আবাদও করেন। ইতোমধ্যে আগের রোপিত ঘৃতকুমারীর গাছ থেকে প্রায় ৪ হাজার চারা তৈরি করে বিক্রি করেছেন। আগামী ৩ মাসের মধ্যে ২০ হাজার ঘৃতকুমারীগাছের পাতা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি শুরু হবে।
মিশ্র বাগানের মালিক প্রাঞ্জল সাংমা জানায়, আশা করছি এক মাস অন্তর প্রায় ৮ মাস পর্যন্ত ২৫ টাকা কেজি দরে ৫ হাজার কেজি ঘৃতকুমারী প্রায় সোয়া লাখ টাকা বিক্রি করতে পারব। এ ছাড়া শতমূল বিক্রি হবে আরও প্রায় ৫০ হাজার টাকার। আগামী এক মাসের মধ্যে বাগানের আম বিক্রি হবে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ঘৃতকুমারীর পুরাতন গাছ থেকে উৎপাদিত আরও প্রায় ১ লাখ চারা ৫ টাকা দরে ৫ লাখ টাকা বিক্রি করা যাবে। পাশাপাশি মৌসুম মতো আদা-হলুদসহ অন্যান্য সবজি, আনারস, সুপারিও বিক্রি করা যাবে।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে বিগত ৮ মাস ধরে প্রতিদিন নিয়মিতভাবে তার বাগানে স্থানীয় বেকার ৮ থেকে ১০ জন শ্রমিক কাজ করছে। ইতোমধ্যে আমার বাগানে শ্রমিকের বেতনসহ সর্বসাকুল্য খরচ হয়েছে ৪ লাখ টাকা। তবে সরকারি কোনো সাহায্য ও সহযোগিতা পেলে আমাদের এ এলাকার পাহাড়ি ঢালুতে পতিত হাজার হাজার একর জমিতে স্বল্পমেয়াদি ঔষধি, ফলদ ও সবজির মিশ্র বাগান করা সম্ভব। এতে এলাকার বেকার সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নও হবে চোখে পড়ার মতো। প্রাঞ্জল সাংমার মিশ্র বাগান দেখে এলাকার অনেক বেকার এবং স্থানীয় আদিবাসী কৃষক উদ্বুদ্ধ হয়েছে এ ধরনের মিশ্র বাগান করতে।
সুত্র, বনিক বার্তা/ কৃপ্র/এম ইসলাম