কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের হাওরাঞ্চলের একমাত্র বড় হাওর ডিঙ্গাপোতায় মাছের পোনা সাবাড় করছে এক শ্রেনীর সুযোগ সন্ধানী মানুষ। হাওর এলাকা সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, তেথুলিয়া ইউনিয়ন, মাঘান সিয়াধার ইউনিয়নের হাওরপাড়ের গ্রামের কিছু সুযোগ সন্ধানী মানুষ সন্ধ্যা নামার পর ডিঙ্গাপোতা হাওরে পোনা মাছ ধরার উৎসবে মেতে উঠে। সারা রাত চলে এ উৎসব। দিনের বেলায়ও দেখা যায় অসংখ্য নৌকাযোগে নিষিদ্ধ মশারী জাল, খনা জালকে পোনা মাছ নিধন করার কাজে ব্যবহার করা হয়। প্রতিবেদন ইত্তেফাক অনলাইনের।
বিশাল স্থানজুড়ে এই সব জাল ফেলা হয়। এই জালে মাছের পোনা তো আসেই, ডিমও চলে আসে। সারারাত যারা পোনা মাছ ধরার পর পেনা মাছগুলো মোহনগঞ্জ মাছঘাটসহ বিভিন্ন পাইকারী বাজারে আসে সকালে। ট্যাংকিতে নিয়ে আসা পোনা মাছ টিকা (অনুমানে) হিসেবে বিক্রি হয়। চালান হয় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
তেথুলিয়া হাওরের সামনে কথা হয় এক মহিলার সঙ্গে, রেহেনা নামের এই মহিলা জানান, তার স্বামী ট্রলারে গিয়ে খনা জাল দিয়ে মাছ ধরেন। আজ বিক্রি হয়েছে ১৮ হাজার টাকা। এক টানে ৬মন মাছ ধরা পড়েছে। ২য় বার জাল ফেলার সময় হাওরে ঝড় ওঠায় ফিরে আসতে হয় বাড়ীতে। ২বার জাল ফেলতে পারলে দ্বিগুন টাকা আয় হয়।
এমন অর্ধশতাধিক ট্রলার প্রতি রাতে মাছ ধরে থাকে। মশারী জালে ধরা পড়ছে রুই, আইড়, বোয়াল, কালি বাউস, ধনিয়া, বাইম, ছোট মাছের মধ্যে গুলশা, টেংরা, চান্দা, চাপিলা,চেলা ,মলা মাছের পোনা। মাছ ঘাটের এক বড় ব্যবসায়ী জানান, সকালে যে মাছের পোনা বাজারে আসে তা দেখলে চোখের পানি ধয়ে রাখা যায় না।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য দীলিপ কুমার সাহা জানান, ইতিপূর্বে পাইকিং করে পোনা মাছ ধরা থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করা হয়েছিল। কিছুদিন বন্ধও ছিল। রাতের বেলা পোনামাছ ধরছে। বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করা পর আবারও মাংকিং করা হচ্ছে। তেথুয়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মুরাদ আক্ষেপ করে বলেন, যারা পোনা মাছ ধরছে তারা সরকারী সহায়তার আওতাভুক্ত। অচিরেই এ ব্যাপারে কঠিন ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ আরিফুর রহমান জানান, আগাম বন্যায় হাওরের ফসল পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রত্যেক ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে বিনামূল্যে ৩০ কেজি চাল, নগদ ৫০০ টাকার প্রদান করা হচ্ছে। এ ছাড়াও খোলা বাজারে প্রতিদিন চাল বিক্রি কার্যক্রম ও অন্যান্য ভাতাদি অব্যাহত হয়েছে।
ভুক্তভোগী ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা জানায়, ক্ষতিগ্রস্থ সংখ্যার তুলনায় সরকারী সহায়তা খুবই অপ্রতুল। এ কারনে অনেক পরিবার কাজের সন্ধানে এলাকা ছেড়ে অন্যস্থানে পাড়ি জমাচ্ছে। অনেকে অপরাধ জেনেও পোনা মাছ ধরছে। আর মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো দিশেহারা।
কৃপ্র/এম ইসলাম