কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা ‘বঙ্গবন্ধু আইল্যান্ড’ হতে পারে একটি বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র ও নীল অর্থনীতির উৎস। সমুদ্র পৃষ্ঠে থেকে দুই মিটার উচ্চে গড়ে ওঠা ৭ দশমিক ৮৪ বর্গ কিলোমিটার ‘বঙ্গবন্ধু আইল্যান্ড’কে গেজেটের মাধ্যমে নামকরণ এবং সুষ্ঠুভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করাও জরুরি। আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু আইল্যান্ড’ এক গবেষণা কার্যক্রমের ফলাফল উপস্থাপনকালে এই সব কথা জানানো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী মাল্টিমিডিয়া শ্রেণীকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা বঙ্গবন্ধু আইল্যান্ড সম্পর্কিত বিজ্ঞানভিত্তিক অনুসন্ধান কার্যক্রমের ফলাফল উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম ।
সংবাদ সম্মেলনে আইল্যান্ডের নামকরণ, ভূমিরূপগত পরিবর্তন এবং পর্যটন সম্ভাবনা নিয়ে আলোকপাত করা হয়। সংবাদ সম্মেলনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম বঙ্গবন্ধু দ্বীপের উৎপত্তি, ক্রমবিকাশ, পর্যটন আকর্ষণ, জীববৈচিত্র্য এবং পরিবেশবান্ধব উপযোগিতা সম্পর্কে বিস্তারিত গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, গবেষণালব্ধ ফলাফল বাংলাদেশের সমুদ্র সম্পদ, উপকূলীয় অঞ্চলের সম্পদ ব্যবহার, সমুদ্রকেন্দ্রিক অর্থনীতি এবং পর্যটন নিয়ে উন্নয়ন কর্মকা-ের কার্যক্রমের সম্ভাবনা সৃষ্টি হলো। এতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় এই কর্মকা- ভূমিকা রাখবে বলে উপাচার্য আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় তার আর্থিক সীমাবদ্ধতা, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, গবেষণাগারের অপ্রতুলতার মধ্য দিয়েও অত্যন্ত নীরবে নানা বিষয়ে বহুমাত্রিক মূল্যবান গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অব্যাহত গবেষণা কার্যক্রম এবং এর ফলাফল সম্পর্কে তথ্য উপস্থাপনের জন্য গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নিয়ামুল নাসের সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নেœর জবাব দেন। ২০১২ হতে ২০১৪ সালে বঙ্গোপসাগরে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে ১ লাখ ৩০ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকা বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর এই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯ সদস্যের একটি গবেষণা দল। বঙ্গবন্ধু আইল্যান্ড নীল অর্থনীতি বিকাশে উপকূলীয় ইকো ট্যুরিজম বিশেষ অবদান রাখতে পারে বলে গবেষণার ফলাফলে ওঠে এসেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
অধ্যাপক ড. মো: শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে ২৮ সদস্যের একটি অনুসন্ধানী দল গত ১১-১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা বঙ্গবন্ধু আইল্যান্ডে সর্বপ্রথম একটি বিজ্ঞান ভিত্তিক অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করে।
উপককূলীয় এলাকা জেলে সম্প্রদায় অধ্যুষিত দুবলারচর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে ‘বঙ্গবন্ধু আইল্যান্ড’ প্রকৃতির সৃষ্ট গাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণি রয়েছে বলে জানা যায়। সমুদ্র তীরে অবস্থিত মালদ্বীপের মত বাংলাদেশের সমুদ্র তীরে জেগে ওঠা দ্বীপগুলিকে নীল অর্থনীতি বিকাশে সরকারি উদ্যোগ জরুরী হয়ে ওঠেছে এবং এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান হয়।
সুত্রঃ বাসস/ কৃপ্র/এম ইসলাম