‘১০ হাজার হেক্টর আউশ ক্ষেত নিমজ্জিত ‘
কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর টানা বর্ষনে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধের নতুন তিনটি স্থানসহ পুরাতন ভাঙন এলাকা দিয়ে পৌর এলাকা ও ৬টি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রাম বন্যাকবলিত হয়েছে। ১০ হাজার হেক্টর আউশ ক্ষেত নিমজ্জিত হয়েছে। কমলগঞ্জের উজানে প্লাবনের পানি নামতে শুরু করায় চারটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে অবস্থার অবনতি হয়েছে।
উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের ঘোড়ামারা, নাজাতকোণা, দক্ষিণ তিলকপুর গ্রাম এলাকায় ধলাই প্রতিরক্ষা বাঁধে নতুন ভাঙন সৃষ্টি হয়। এছাড়া পুরাতন ভাঙন এলাকা দিয়ে পানি প্রবেশ করে কমলগঞ্জ পৌরসভার আলেপুর, শ্রীচন্দ্রপুর, গোবর্দ্ধনপুর, শ্রীনাথপুর, নছরতপুর, কুশালপুর, উত্তর আলেপুর ও চন্ডিপুর গ্রামের বসতবাড়ি ও ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। আদমপুর ইউনিয়নের ঘোড়ামারা, হোমেরজান, নাজাতকোণা, দক্ষিণ তিলকপুর, মঙ্গলপুর, আলীনগর ইউনিয়নের কামুদপুর, আলীনগর বস্তি, জালালিয়া, শমশেরনগর ইউনিয়নের বড়চেগ, ঈদগাহ টিলা, শিংরাউলী, কৃষ্ণপুর, হাজীনগর, সতীঝিরগাঁও, রাধানগর, মরাজানের পার ও পতনউষার ইউনিয়নের ধোপাটিলা, শ্রীসূর্য, হালাবদি, চন্দ্রপুর, মহেষপুর বৈদ্যনাথপুর, রাধাগোবিন্দপুর ও ব্রাহ্মণ উষার ইউনিয়ন প্লাবিত হয়।
মুন্সীবাজার ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ডে ২৩টি গ্রাম ও ফসলি জমি প্লাবিত হয়। মাধবপুর ইউনিয়নের ছয়সিঁড়ি, বাঘাছড়া, ঝাপেরগাঁও, মাধবপুর বাজার প্লাবিত হয়। ধলাই নদী ও লাঘাটা ছড়া ছাড়াও শমশেরনগরে ধামালিছড়া, মাধবপুরে সুন্দরবন ছড়া, আদমপুরের লাউয়াছড়াসহ সবগুলো পাহাড়ি ছড়ায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে বাড়িঘর ও ফসলি জমি নিমজ্জিত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা আহাজারি করে বলেন, বোরো ফসলের পর এবার আউশ ক্ষেতেও পানিতে তলিয়ে বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এবার তারা কোনো ফসলই ঘরে তুলতে পারবেন না। কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জুয়েল আহমদ পৌরসভা এলাকায় ধলই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে পুরাতন একটি ভাঙন দিয়ে পানি প্রবেশ করে আটটি গ্রাম প্লাবিত ও ফসলি জমি নিমজ্জিত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন। পানিবন্দি মানুষ গবাধিপশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন। মনু ও ধলাই নদীর ভাঙনের ফলে নিম্নাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামছুদ্দীন আহমদ বলেন, এবার ধলাই প্রতিরক্ষর বাঁধের ভাঙনে উপজেলার অধিকাংশ স্থানে আউশ ক্ষেত তলিয়ে গেছে। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত উপজেলায় সাড়ে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে আউশ ধান রোপণ করা হয়েছিল। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে নতুন করে তিনটি স্থানে ভাঙনে পৌর এলাকা ও ছয়টি ইউনিয়নের ভেঙে চারটি গ্রামে পানি প্রবেশের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিতে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সুত্রঃ ইত্তেফাক/ কৃপ্র/এম ইসলাম