কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ কক্সবাজারে ১০০ ডিম বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩৫০ টাকায়। সে হিসাবে প্রতিটি ডিমের দাম পড়ে সাড়ে ৩ টাকা। এক মাস ধরেই এমন পরিস্থিতি চলছে। অথচ মাসখানেক আগেই ১০০ ডিম বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। ডিমের এ দরপতনে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন পোলট্রি খামারিরা। অনেকে বাধ্য হয়ে মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন। খামারিরা বলছেন, এমনিতে কয়েক মাস ধরে ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে। এর মধ্যে বেড়েছে পোলট্রি ফিডের দাম। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় মোরার কারণেও অনেক খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন বাজারে ডিমের যে দাম, তাতে তাদের পথে বসার জোগাড়।
কক্সবাজার নারী উদ্যোক্তা সমিতির সভাপতি পোলট্রি খামারি নয়ন সেলিনা জানান, বর্তমানে প্রতিটি ডিম আকার ও রঙভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে সাড়ে ৩ টাকায়। তার খামারে ছয় হাজারের বেশি লেয়ার মুরগি আছে। প্রতি বস্তা খাবারের দাম পড়ছে ১ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা। খাবারের দাম, কর্মীদের মজুরি, মুরগির চিকিত্সা সব খরচ মেলালে ডিমের যে দাম, তাতে আসল টাকাও উঠছে না।
তিনি বলেন, একদিকে ব্যাংক লোন, অন্যদিকে ডিমের দাম কম— সব মিলে ভালো নেই কোনো খামারিই। সরকার এ শিল্পের প্রতি সুনজর না দিলে অচিরেই কক্সবাজারে পোলট্রি ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। এমন হলে কর্মসংস্থান হারাবে কয়েক হাজার মানুষ। নয়ন সেলিনা বলেন, সাত মাস ধরে ব্যবসা মন্দা। এক মাস ধরে অবস্থা আরো খারাপ। এরই মধ্যে অনেকে ব্যবসা ছেড়েছেন।
রামু চেইন্দা এলাকার খামারি নুর হোসেন জানান, ডিমে লাভ থাকছে না। এছাড়া যেসব খামারি বাকিতে খাদ্য কিনেছেন, বস্তাপ্রতি তাদের অতিরিক্ত দাম দিতে হয়েছে। ফলে তাদের লোকসানের পরিমাণও বেশি। আবার অর্থাভাবে যেসব ছোট খামারি অগ্রিম ডিম বিক্রি করে দিয়েছেন, তারা বাজারের চেয়েও কম দাম পেয়েছেন। এখন ভ্যাকসিন কিনতেও অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে।
উখিয়ার রাজাপালং এলাকার খামারি আব্দুর রহমানের শেডে ৫০০ মুরগি। যথেষ্ট ডিম পাচ্ছেন। কিন্তু প্রতি মাসে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।পাইকারি ব্যবসায়ীরা ডিমের দাম কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বলছেন, গরমকালে এমনিতেই ডিমের চাহিদা কম থাকে। তাছাড়া সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে হোটেল-রেস্টুরেন্টে। কিন্তু রমজানে সেগুলো বন্ধ থাকায় বাজারে ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম চৌধুরী খামারিদের বাজারের চাহিদা বিবেচনা করে ডিম উৎপাদনের পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, সরকার মুরগির খাদ্য বিষয়ে এবারের বাজেটে কোনো ব্যবস্থা রাখলে পোলট্রি শিল্পের জন্য ভালো হতো।
সুত্র, বনিক বার্তা/ কৃপ্র/এম ইসলাম