কৃষি প্রতিক্ষন ডেস্ক : কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে ১ কেজি ধানের উৎপাদন খরচ ২১ টাকা। আর কৃষকরা খোলা বাজারে তা বিক্রি করছেন ১২ থেকে ১৫ টাকা। তাই কেজিতে ক্ষতি অন্তত ৬ টাকা। একরে ২২শ কেজি ধান উৎপাদন হলে লোকসান ৪ হাজার টাকা। এই লোকসান মেনে নিতে না পেরে পোড়া কপালী কৃষকরা রাজপথে ধান ছিটিয়ে করছেন প্রতিবাদ। কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ধান উৎপাদন না হওয়ায় কৃষকের কপাল পুড়ছে। কেন্দ্রীয়ভাবে ধানের সরবরাহ না করে প্রান্তিক বা স্থানীয় পর্যায়ে ধান সংরক্ষণ করা উচিত বলে মনে করেন তারা। যে ধানে স্বপ্ন বুনেছিল কৃষক, শ্রমঘামের সেই ফসল, নিজের হাতে ছিটাচ্ছেন রাজপথে। ফসলের ন্যায্যমূল না পাওয়ায়, তাদের এই প্রতিবাদ।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট-ব্রির গবেষণা বলছে, বোরো মৌসুমে, দেশে একর প্রতি গড়ে ধান উৎপাদন হয় ২২ শ কেজি। আর কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসেবে, প্রতি কেজি ধানের উৎপাদন খরচ ২১ টাকা। কৃষকের খরচকে আমলে নিয়ে সরকার এ বছর কৃষকের কাছ থেকে যে ৭ লাখ টন ধান কিনছে, তার দাম ধরা হয়েছে কেজিতে ২৩ টাকা। কিন্তু সেই সুযোগ সব কৃষক পাচ্ছেন না। যে কারণে বাজারে তাদের ধান বিক্রি করতে হচ্ছে মাত্র ১২ থেকে ১৫ টাকা কেজিতে। ফলে কেজিতে কৃষকের ক্ষতি কমপক্ষে ৬ টাকা। আর একরে লোকসান অন্তত ৪ হাজার টাকা।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় দেশে ধানের উৎপাদন খরচ বেশি। তাছাড়া বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ধান উৎপাদন না করার কারণেও কমেছে ধানের দাম।সব সময় বাজারের লাগাম টেনে ধরা সহজ নয়। তবে উন্নত বিশ্বের মতো গ্রাম ও স্থানীয় পর্যায়ে ধান সংরক্ষণ কর্মসূচি নিলে, কৃষকের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করা সম্ভব বলেও মনে করেন কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ। কৃষকের এই সঙ্কট দূর করতে না পারলে, দেশকে উন্নত করার প্রচেষ্টা ব্যাহত হবে বলেও আশংকা এই অর্থনীতিবিদের।