কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক: বরগুনা জেলায় এ বছর তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে। হেক্টর প্রতি ৪৫ টনের বেশি তরমুজ ফলেছে। ভালো দাম পাওয়াতে কৃষকও খুশি। গত বছরের লোকসানের ভয়ে কৃষকরা তরমুজের আবাদ কমিয়ে সে জমিতে মুগডাল ও বোরো ধানের আবাদ করে তাতেও ভালো ফলন পেয়েছেন। বরগুনার তরমুজ চাষিরা গতবছর অকাল বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টিসহ নানা প্রতিকুলতায় লোকসানে পড়েছিলেন। এ বছর জেলায় লক্ষ্যমাত্রার মাত্র এক-তৃতীয়াংশ জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। তবে ভালো ফলন হওয়াতে এবং দাম বেশি পাওয়াতে চাষিরা বেশ খুশি। প্রায় এক যুগ ধরে ধারাবাহিকভাবে যে জমিতে তরমুজ ফলানো হতো স্থানীয় চাষিরা ঝুঁকি না নিয়ে এ বছর সে জমিতে মুগডাল আর বোরো ধানের আবাদ করেছেন।
বরগুনা জেলা কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় মোট তরমুজ আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৫১৯ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে বরগুনা সদর উপজেলায় ১ হাজার ১০ হেক্টর, আমতলীতে ১ হাজার ৫০০ হেক্টর, তালতলীতে ২ হেক্টর, পাথরঘাটা উপজেলায় ৭ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়েছে। তরমুজ চাষি ও পাইকারী ক্রেতাদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, উপকূলীয় বরগুনা জেলায় উৎপাদিত তরমুজ অপেক্ষাকৃত সুস্বাদু হওয়ায় দেশজুড়ে এর চাহিদাও ব্যাপক। পথে নানা ঝামেলার কারণে পাইকাররা গত বছর এ জেলায় তরমুজ কিনতে খুব একটা আগ্রহ দেখাননি। অনেক কৃষকের উৎপাদিত তরমুজ ক্ষেতেই নষ্ট হয়েছে। সেই সাথে ছিল প্রাকৃতিক দুর্যোগ। কৃষকরা তরমুজ চাষে আগ্রহ হারিয়েছেন, জানালেন, আমতলী উপজেলার হলদিয়া গ্রামের কৃষক আ. খালেক। তিনি জানান, পাঁচ একর জমিতে এবছর তরমুজ চাষ না করে মুগ ডাল আর বোরো ধানের আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে।
আমতলীর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম বদরুল আলম বলেন, জেলায় সব থেকে বেশি তরমুজ আবাদ করা হয় আমতলী উপজেলায়। গতবছর শুধু এ উপজেলাতেই ৫ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ করা হয়েছিল। কিন্তু বোরো ধানের ভালো দাম প্রাপ্তি, তরমুজের বীজের দাম বৃদ্ধি এবং তরমুজ চাষে বৈরি আবহাওয়ার বাঁধা, নানা কারণে আমতলীসহ জেলায় তরমুজের আবাদ কমেছে। তবে এ বছর ভালো ফলন হয়েছে। হেক্টর প্রতি ৪০ টনের বেশি তরমুজ ফলেছে। তিনি আরও জানান, হঠাৎ করে বোরো ধানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষক বেশি লাভের আশায় আমতলী উপজেলাতেই প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। আমতলীতে মাত্র ১২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল। সমগ্র জেলায় প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমি মুগ ডাল ও বোরো চাষের আওতায় এসেছে।
বরগুনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শাহী নুর আজম খান বলেন, উপকূলীয় এ জেলায় তরমুজ চাষ অত্যন্ত ঝঁকিপূর্ণ। অকাল বৃষ্টির কারণে তরমুজ চাষ করে গত বছর চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এর ফলে এ বছর বরগুনায় তরমুজ চাষ অনেক কমেছে। সেই সাথে পরিপূরক হিসেবে চাষিরা ডাল ও বোরোর আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন।
সুত্র, বাসস / কৃপ্র/এম ইসলাম