কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
সুনামগঞ্জের হাওরজুড়ে এখন সবুজ ধানের সমারোহ।সবুজ ধানের শিষ লালচে হতে শুরু করেছে। ফলনও ভালো হয়েছে। কৃষকের চোখে-মুখে আনন্দ। হাওর এলাকায় গত বছর এ সময়টায় ছিল কৃষকদের বুকফাটা হাহাকার।বন্যায় হাওড়ের বাঁধ ভেঙ্গে ঘরবাড়ি গবাদিপশু আর ফসলহানিতে তখন দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন কৃষকরা। গত বছরে নিঃস্ব কৃষকরা এবার দেখছেন অন্য এক স্বপ্ন । ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। আর মাত্র কটা দিন।আসছে বৈশাখ শুরু হবে ধান কাটার উৎসব। বুকজুড়ে আশা, এবার ধান তুলতে পারবেন। গত বছরের ফসল হারানোর কষ্ট কেটে যাবে।
কয়েকজন কৃষক জানালেন গত বছরও একইভাবে ধান লাগিয়েছিলেন তারা। কিন্তু বন্যায় সব ধান তলিয়ে যায়। গতবারের দেনা আছে। এবারও জমি আবাদ করতে গিয়ে দেনা করতে হয়েছে। তবে ভালোভাবে ধান ঘরে তুলতে পারলে সব ধারদেনা শোধ করতে পারবেন।কৃষকরা জানালেন গত ১ বছর খুব কষ্টে কাটছে তাদের। খেয়ে না খেয়ে দিন গেছে। গত বছরের হাওরের থইথই পানি দেখিয়ে কেঁদেছিলেন এই কৃষকরা। তখন সব ধান ছিল পানির নিচে। ঠিক এক বছর পর আবার হাওরজুড়ে ফসলের সমারোহ।
গত বুধবার পানিসম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু সুনামগঞ্জে এক মতবিনিময় সভায় বলেন, হাওরের ফসল রক্ষায় এবার সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে সুনামগঞ্জের প্রধান ফসল বোরো। জেলায় ১৫৪টি হাওরে বোরো ধানের আবাদ হয়। গত বছরের এপ্রিল মাসের অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার সব হাওরের ধান তলিয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৩ লাখ ২৫ হাজার ৯৯০টি কৃষক পরিবার। এ বছর ২ লাখ ২২ হাজার ৭১৯ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ২১ হাজার ৭৯২ মেট্রিক টন।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্র জানায় হাওরের ফসল রক্ষায় ১ হাজার ৪৯০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে নতুন বাঁধ হয়েছে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার।
কৃপ্র/ এম ইসলাম