কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০০৪-০৫ অর্থবছরে দেশে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৭৬ হাজার টন। ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে ২০০৭-০৮ অর্থবছরে সরকার হাতে নেয় বেশ কয়েকটি উদ্যোগ। সেই ধারাবাহিকতায় গেল অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ছুঁয়েছে প্রায় ৫ লাখ টনে।
মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৩ লাখ ৯৪ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদিত হয়। সর্বশেষ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৯৬ হাজার বা প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টনে। অধিদপ্তরের হিসাবে, গত অর্থবছরে দেশে উৎপাদিত মাছের প্রায় ১২ শতাংশই ছিল ইলিশ। প্রতি কেজি ইলিশের দাম ৫০০ টাকা ধরে হিসাব করলে ৫ লাখ মেট্রিক টন ইলিশের বাজারমূল্য দাঁড়ায় প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। এর আগে ২০১২-১৩ এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশে ইলিশ উৎপাদিত হয়েছে যথাক্রমে সাড়ে ৩ লাখ ও ৩ লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন।
ইলিশ রক্ষার সুফল পেয়েছেন প্রান্তিক জেলেরাও। তবে অভিযান চলাকালে এখনো দূর্দশায় দিন কাটে অনেক জেলে পরিবারের। তবে ইলিশ উৎপাদনের এ সাফল্যে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে, সমুদ্র থেকে মিঠাপানিতে প্রবেশ পথে পটুয়াখালী জেলায় নেয়া শিল্পায়ন প্রকল্প। আর ইলিশ ধরা বন্ধ রাখতে জেলেদের দেয়া সরকারী সহায়তা নিয়েও উঠেছে নানা প্রশ্ন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ইলিশ গবেষক ড. আব্দুল ওয়াহাব বলেন, দেশের ইলিশের একটি বড় অংশ সমুদ্র থেকে উঠে আসে উপকূলীয় পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া এলাকা হয়ে। আর সেখানে নেয়া সরকারের বিদ্যুৎ এবং শিল্পায়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বাধাগ্রস্থ হবে ইলিশের উৎপাদন। ইলিশের বিচরণ পথের এই বাধা নিয়ে চিন্তিত মৎস্য বিভাগও।
মৎস্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ি, সারাবিশ্বের মোট ইলিশের ৬৫ শতাংশ উৎপাদন হয় বাংলাদেশে। যা দেশের মোট মৎস্য সম্পদের ১১ শতাংশের বেশি। আর এর আনুমানিক আর্থিকমূল্য প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। এছাড়া ভারতে ১৫ শতাংশ ও মিয়ানমারে ১০ শতাংশ ইলিশ উৎপাদিত হয়। বাকি ইলিশ আরব সাগর তীরবর্তী এবং প্রশান্ত ও আটলান্টিক মহাসাগর তীরবর্তী দেশগুলোতে ধরা পড়ে।মা ইলিশ রক্ষা, প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা বন্ধ এবং অভয়ারণ্য সৃষ্টির মত উদ্যোগের কারণে গত এক যুগে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। ওয়ার্ল্ড ফিশের তথ্য অনুযায়ী, ইলিশ উৎপাদন হয় বিশ্বের এমন ১১টি দেশের মধ্যে ১০টিতেই উৎপাদন কমছে। একমাত্র বাংলাদেশেই উৎপাদন বাড়ছে।
সুত্র, dbcnews.tv / কৃপ্র/এম ইসলাম