কৃষি প্রতিক্ষণ দেস্ক।।
ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুরের কৃষকরা দিশেহারা পড়েছেন। অকাল বর্ষণ, শ্রমিক সংকট আর বৈরী আবহাওয়ার কারণে তারা পাকা ধান ঠিকমত ঘরে তুলতে পারছেন না। প্রবল বর্ষণে কোথায়ও ধান একেবারে পানির নিচে তলিয়ে গেছে, যে ধান কৃষক ঘরে এনেছেন সেই ধানেও পচন ধরেছে। ধান কাটার খরচই মিলছে না। এদিকে, অকাল বর্ষণ, বজ্রপাত ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে দেখা দিয়েছে প্রবল শ্রমিক সঙ্কট। প্রতি কাঠা (১০ শতাংশ) জমির ধান কাটাতে শ্রমিককে মজুরি দিতে হচ্ছে ১৫০০ টাকা। ধান মাড়াই খরচ ৪০০ টাকা। ধান হয়েছে প্রায় ৪/৫ মণ। রোদ না থাকায় কাঁচা ধান শুকাতে পারছেন না কৃষক।
কৃষক সামছ উদ্দিন জানান, আধাপাকা ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। ধানের শীষটুকুও দেখা যায় না। এ ধান পানির নিচে রেখে ঘুম আসে না। কাঁচি দিয়ে কেটে আনার চেষ্টা করছি।
এদিকে কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলীতে টানা দুই সপ্তাহের অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে রোদের দেখা মেলেনি নিকলী উপজেলায়। তাই কৃষকেরা কিছু জমির ধান কেটে নদীর পাড়ে, কেউ উঁচু স্থানে স্তূপ দিয়ে রেখেছে। তবে টানা ১৫ দিনের বৃষ্টিতে স্তূপে কাটা ধান পচে চারা গজিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার মণ ধান। উপজেলার সদর, সিংপুর, কারপাশা, দামপাড়াসহ কয়েকটি এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, টানা বৃষ্টির কারণে জমি থেকে পাকা বোরো কেটে আনলেও ধান রোদের অভাবে শুকাতে না পারায় স্তূপের মধ্যে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একেকটি ধানের স্তূপে এক ইঞ্চি পরিমাণ লম্বা চারা গজিয়েছে। যে ধান তাদের কোনো কাজেই আসবে না।
কৃষকেরা আফসোস করে বলেন, জমির ধান বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে যেত, সেটাই ভালো ছিল। কিন্তু সে ধান পানিতে অনেক পরিশ্রমের বিনিময়ে ও বেশি টাকা মজুরি দিয়ে কেটে এনে আরো বিপাকে পড়তে হলো। এ ধান মানুষ তো দূরের কথা কোনো হাঁস-মুরগিরও খাওয়ার উপযোগী নয়।
কামালপুর এলাকার আলআমিন মিয়া বলেন, ‘আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেছে। পানি আসতে দেখে ২৫ একর জমি পাকা ধান প্রতিজন শ্রমিককে এক হাজার টাকা দিয়ে ৭০ হাজার টাকা খরচ করে কেটে এনেছিলাম। কিন্তু ১৫ দিন ধরে এক জায়গায় স্তুপ করে রাখায় ধানে চারা গজিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
নিকলী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ হারুন-অর রশিদ বলেন, অব্যাহত বৃষ্টির কারণে কৃষকদের কাটা ধানের স্তূপে চারা গজিয়েছে। যে ধানগুলোতে চারা গজিয়েছে যদি এখন রোদও ওঠে, তবু চালের পুষ্টিগুণ তো থাকবেই না বরং তেতো লাগবে।
সুত্র, ইত্তেফাক/ কৃপ্র/এম ইসলাম