কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
কুড়িগ্রাম জেলার চরাঞ্চলে বাড়ছে অর্থকরী ফসলের চাষাবাদ। চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক ফলন হওয়ায় কৃষি বিভাগ এখন পরিবেশ বান্ধব ফসলের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। প্রতিবছর বন্যা, খরা, নদী ভাঙন ও শৈত্যপ্রবাহের বিরুপ পরিবেশের কারণে কোন না কোনভাবে ফলন বিপর্যয় ঘটে যাচ্ছে। এর থেকে রেহাই পেতে কৃষি বিভাগ পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করছে বিভিন্ন বৈরী প্রকৃতি সহনশীলজাতের আবাদ। ফলাফলও আশানুরুপ হওয়ায় এ ধরণের চাষাবাদে ঝুকে পরছে কৃষককরা।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য মতে, ১৬টি নদ-নদীময় এ জেলায় ২৩০টি চরে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা যায়। এরমধ্যে ৮টি চরে ৭ হাজার ২৭৫ হেক্টর জমিতে নিয়মিত চাষাবাদ করা যাচ্ছে। এছাড়াও নদীর ভাঙ্গা-গড়া ও পলিগঠনের ফলে চাষাবাদে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এবার জেলার ৯টি উপজেলায় চরাঞ্চলে ২৯ হাজার ৮২৪ হেক্টর জমির মধ্যে ২২ হাজার ৫৪৯ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে কুড়িগ্রাম সদরে ৫ হাজার ৮২০ হেক্টর, উলিপুরে ২ হাজার ২৫০ হেক্টর, চিলমারীতে ৮ হাজার ৩০৯ হেক্টর, রৌমারীতে ৬১০ হেক্টর, রাজিবপুরে ১ হাজার ২৫০ হেক্টর, ভূরুঙ্গামারীতে ২ হাজার ৯৫ হেক্টর, নাগেশ^রীতে ১ হাজার ১৫৫হেক্টর, ফুলবাড়ীতে ২৫০ হেক্টর এবং রাজারহাটে ৮১০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন অর্থকরী ফসল চাষ করা হয়েছে।
এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, এবার চর এলাকায় ভুট্টা ৩ হাজার ৫শ’ হেক্টর, কলা ৩শ’ হেক্টর, চিনাবাদাম ২ হাজার ১শ’ হেক্টর, মিষ্টি আলু ১ হাজার ৯৫০ হেক্টর, সরিষা ৫ হাজার ৬শ’ হেক্টর, তিল ৩৫০ হেক্টর, তিসি ২৫০ হেক্টর, পেঁয়াজ ৪৫০ হেক্টর, রসুন ৩৬০ হেক্টর, স্কোয়াস ২শ’ হেক্টর, মহুরী ১৮০ হেক্টর, বোরো ধান (স্থানীয়) ১ হাজার ৫শ’ হেক্টর, শাকসবজী ৩ হাজার ৫শ’ হেক্টর, আখ ৪৫০ হেক্টর, ধৈঞ্চা ৩৫০ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ৪৫০ হেক্টর এবং অন্যান্য ফসল ১ হাজার ৫৯ হেক্টর আবাদ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে চাষের পরিমাণ আরো বেড়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ বিবাগের উপ-পরিচালক ড. মো: মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান জানান, প্রতিনিয়ত বৈরী প্রকৃতির সাথে লড়াই করে এখানকার মানুষ কৃষিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। উদ্বৃদ্ধ ফসল উৎপাদন করে তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তা পৌঁছে দিচ্ছে। তবে সাধারণ চাষীরা পরিবর্তিত পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নতুন নতুন আবাদ করলেও অনেক সময় তারা সঠিক মূল্য পাচ্ছে না। এছাড়াও এই জেলায় বাণিজ্যিকহারে চাষাবাদে আরো বেশী লোককে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি জানান, এখানে বাজার সৃষ্টি করা এবং প্রকৃত মূল্যে ফসল রফতানি করার সুযোগ পেলে কৃষকরা আরো স্বাবলম্বী হতে পারবে।
সুত্র, বাসস/ কৃপ্র/ এম ইসলাম