কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
মেহেরপুরের বাজার এখন আউস কচুতে সয়লাব। মেহেরপুরের বাজারে এ আউস কচু খুচরা ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আগাম এ কচুর ভাল পেয়ে চাষিরা খুশি। আর একমাস পরে বাজারে আসবে সুস্বাদু আমন কচু। অন্যান্য বছরের মতো এবারও কচুর মূল্য বেশি এবং লাভবান হবেন এমন প্রত্যাশা কচু চাষিদের।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের হিসাব মতে, এ বছর জেলায় প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে কচুর চাষ হয়েছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মেহেরপুরের কচুর চাহিদা রয়েছে। আবহাওয়ার প্রতিকূলতার পরও এ জেলার চাষিরা কচুর ভালো দাম এবং লাভবান হবেন এমনটি প্রত্যাশা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের।
মেহেরপুর সদর উপজেলার কুলবাড়িয়া, আমদহ, পিরোজপুর ও বুড়িপোতা ইউনিয়ন এবং মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী, বাগোয়ান ও মহাজনপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা গেছে পর্যাপ্ত পরিমাণ কচু চাষ হয়েছে। এরই মধ্যে আগাম লাগানো আউস কচু উঠতে শুরু করেছে। আর একমাস পরে সুস্বাদু আমন কচু উঠতে শুরু করবে। সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এ কচুর চাহিদা আরও বেশি।
এ বছর মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের আমজাদ গাইন সাত বিঘা, আশাদুল ছয়, মানিকনগর গ্রামের আবদুল হান্নান পাঁচ, ভবানীপুর গ্রামের আবদুল হালিম মোল্লা চার বিঘা জমিতে কচু চাষ করেছেন।
তারা জানালেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতিবিঘা কচু চাষে ১৫ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু ফাল্গুন মাসে আগাম কচু লাগানোর পর বৃষ্টি বিলম্বিত হওয়ায় এ বছর অনেককে জমিতে পানি সেচ করতে হয়েছে। এতে খরচ বৃদ্ধি পেলেও এ বছর প্রতি বিঘা কচু চাষে খরচ পড়েছে ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা।
তারা মনে করেন, জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষের দিক থেকে চাষিরা পর্যাপ্ত পরিমাণ কচু বাজারে তুলতে পারবেন। অন্য বছরের মতো এ বছরও এ জেলার উৎপাদিত শত শত ট্রাক কচু রাজধানী ঢাকা, বন্দর নগরী চট্টগ্রাম, বরিশাল, নোয়াখালী ও ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হবে। মেহেরপুর সদর উপজেলার উজুলপুর গ্রামের শরিফুল ইসলাম দেড় বিঘা জমিতে কচু চাষ করেছেন।
তিনি বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতি বিঘা জমিতে ৮০ থেকে ১২০ মণ কচু উৎপন্ন হয়। বর্তমান বাজারে প্রায় ১ হাজার ৫০০ টাকা মণ দরে কিচু বিক্রি হচ্ছে। আমন কচু বাজারে এলে কচুর দাম কমে যাবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, গত বছর তিনি ৫০ হাজার টাকা বিঘা দামে খেতেই কচু বিক্রি করেছিলেন। প্রকৃতির বৈরী আবহাওয়ার কারণে কচু চাষে খরচ সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও লাভবান হওয়ায় আশাবাদী জেলার চাষিরা।
মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান গ্রামের চাষি গোলাম মহি হিরুসহ অনেক কচু চাষি মনে করেন, চাহিদা অনুযায়ী খেতের কচু প্রতি বিঘা ৪৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা দরে বিক্রি করলে খরচ ও লাভ বাবদ এককালীন টাকাটা হাতে পাওয়া যায়।
মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম কামরুজ্জামান বলেন, সবজি উৎপাদন খ্যাত জেলা মেহেরপুর। জেলার লাভজনক সবজির মধ্যে কচু অন্যতম। সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠে পর্যান্ত কচু চাষ হয়েছে। এছাড়া আমদহ ও পিরোজপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠেও চাষ হয়েছে কচু।
তিনি আরও বলেন, গত বছর শেষের দিকে কচুর দাম পড়ে যাওয়ায় লাভ করতে না পারলেও আসল টাকা উঠে আসায় ক্ষতিগ্রস্ত হইনি। এ বছর প্রথম থেকে কচুর যথেষ্ট দাম ও চাহিদা আছে বিধায় কৃষক লাভবান হবেন বলে তিনি মনে করেন।
তথ্য সুত্র, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ/ ডেইলি বাংলাদেশ/ কৃপ্র/ এম ইসলাম