কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
কাঁঠালের চারায় কলম কেটে শতভাগ সফলতা পেয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার কল্যাণপুর হর্টিকালচার সেন্টারের বিজ্ঞানীরা। রংপুর ও ময়মনসিংহ হর্টিকালচার সেন্টারে শীতের আগে ও শীতের শেষ দিকে চারা কলম তৈরি করা হলেও সেখানকার সফলতা ছিল ৫০ থেকে ৫৫ ভাগ। কিন্তু চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারে শতভাগ সফলতা এসেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার কল্যাণপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক ড. মো. সাইফুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, তার নেতৃত্বে হর্টিকালচার সেন্টারের একদল বিজ্ঞানী কাঁঠালের চারায় কলম কাটায় শতভাগ সফলতা পেয়েছেন। কাঁঠাল এ দেশের জাতীয় ফল হওয়া সত্ত্বেও এ ফল চাষের উন্নয়নে তেমন কোনো কর্ম পরিকল্পনা ও সাফল্যের অগ্রগতি নজরে পড়ে না।
তিনি জানান, ২০১৫ সালে মালয়েশিয়া সফরে গিয়ে কোনো এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় কাঁঠাল চারায় কলম দেওয়া বিষয়ে বিস্তারিত জানেন। পরে দেশে ফিরে এ বিষয়ে অন্য বিজ্ঞানীদের নিয়ে পরামর্শমূলক আলোচনা করে কয়েকজন বিজ্ঞানীর সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করেন। এ কমিটির বিজ্ঞানীরা শুরু করেন কাঁঠালের চারায় কলম কাটায় গবেষণার কাজ। ড. মো. সাইফুর রহমান জানান, প্রথমে কিছুটা সমস্যা দেখা দিলেও বর্তমানে আর কোনো সমস্যা নেই।
বিজ্ঞানীরা জানান, বীজ থেকে জন্মানো গাছে ফলন আসতে সময় লাগে ৫ থেকে ৮ বছর। আর তাদের কলম করা চারায় ফলন আসবে মাত্র দুই বছর থেকে তিন বছরের মধ্যে। এতে কৃষকরা অল্প সময়ে ফলন পেয়ে অধিক লাভবান হবেন। অন্যদিকে বীজ থেকে জন্মানো গাছে মাতৃগাছের বৈশিষ্ট্য হুবহু বজায় থাকে না। ফলে নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়। অনেক ক্ষেত্রে কৃষকরা লোকসানে পড়েন। কিন্তু কলম কাটা গাছে মাতৃগাছের বৈশিষ্ট্য হুবহু বজায় থাকে এবং কলম কাটা গাছে ফলন ভালো হবে বলে তারা দৃঢ় আশাবাদী।
এ সফলতার সংবাদ পেয়ে সম্প্রতি কাঁঠালের চারায় কলম কাটার বিষয়ে জানতে এবং তা সরাসরি দেখতে ওই হর্টিকালচার সেন্টারে যান বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাম-লীর অন্যতম সদস্য এম এনামূল হক। তার সঙ্গে কয়েকজন কৃষি কর্মকর্তাও ছিলেন। পরিদর্শন শেষে এম এনামূল হক সাংবাদিকদের জানান, কাঁঠালে কলম কেটে সফলতা দেশের কাঁঠাল চাষে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে।
কৃপ্র/এম ইসলাম