কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
সিডর ও সাইক্লোন থেকে সাগরপারের পটুয়াখালীর কলাপাড়ার গোটা উপকূলের মানুষের জীবন-সম্পদ হানির ৯০ ভাগ রক্ষা পেয়েছিল বেড়িবাঁধের বাইরের ম্যানগ্রোভ প্রজাতির বনাঞ্চল থাকার কারনে। প্রাচীন এই গাছগুলো যেন বুক আগলে ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের ঝাপটা থেকে মানুষ ও তাদের সম্পদ রক্ষা করেছে। সিডরকালীন পরিসংখ্যানমতে যেসব স্পটে বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের বাইরে বনাঞ্চল ছিল ওই বাঁধ বিধ্বস্ত হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সুত্রমতে সিডরের তান্ডবে কলাপাড়ায় ১১ দশমিক ৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সম্পুর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়। এছাড়া ২০৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আংশিক ক্ষতির শিকার হয়।
মোট ৪০৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে এ পরিমান বাঁধ ক্ষতির কারণ ছিল এইসব বাঁধের রিভার সাইটে বনাঞ্চল ছিলনা। অথচ সিডর পরবর্তী ১১ বছরে বেড়িবাঁধের বাইরের অন্তত আরও দেড় শ’ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের বাইরের প্রাচীন ম্যানগ্রোভ প্রজাতির বনাঞ্চল উজাড় করা হয়েছে। কেউ এসব গাছ কেটে ইটভাটায় বিক্রি করেছে। কেউ জালানি কাঠ হিসেবে বিক্রি করেছে। কেউ পেশাগতভাবে বনদস্যুতা করেছে।
এছাড়া এসব বনাঞ্চল কেটে বাড়িঘর, ইটভাটা, মাছের ঘের করা হয়েছে শত শত। আবার কলাপাড়া ভূমি অফিসের সার্ভেয়াররা বনাঞ্চলকে চাষযোগ্য কৃষিজমি দেখিয়ে বন্দোবস্ত দেয়ায় গাছ কেটে সেখানে ঘরবাড়ি-পুকুর করা হয়েছে। মোটকথা এক কথায় সবুজ দেয়ালখ্যাত প্রাচীন ম্যানগ্রোভ প্রজাতির এই বাগান ধংস করে দেয়া হয়েছে। আর মানবসৃষ্ট পরিবেশ বিনাশী এই অরাজকতা এখন ঝড়-জলোচ্ছ্বাসকালীন র্দূয়োগের চরম ঝুঁকিতে ঠেলে দিয়েছে সাগরপারের মানুষকে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবুল খায়ের জানান, আসলে বাঁধসহ ম্যানগ্রোভ প্রজাতির বনাঞ্চল রক্ষায় প্রয়োজন সমন্বিত ব্যবস্থাপনা। কলাপাড়া উপজেলা বন ও পরিবেশ কমিটির সভাপতি ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তানভীর রহমান জানান, ম্যানগ্রোভ প্রজাতির বনাঞ্চল নিধনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
সুত্র, দৈনিক জনকণ্ঠ/ কৃপ্র/এম ইসলাম