কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
সাতক্ষীরায় সরকারিভাবে হ্যাচারি নির্মাণ করা হয় ২০১১-১২ অর্থবছরে। তিনটি শেডসহ এ হ্যাচারির অবকাঠামো নির্মাণ ও হাঁস-মুরগির বাচ্চা উৎপাদনের জন্য ডিম ফোটানোর ইনকিউবেটর স্থাপনে ব্যয় হয় দেড় কোটি টাকা। এরপর অতিক্রান্ত হয়েছে ছয় বছর। তবু এখনো যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের রসুলপুর এলাকায় সরকারি মোরগ-মুরগি পালন কেন্দ্রের এ হ্যাচারি চালু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। খবর দৈনিক বনিক বার্তা অনলাইনের।
হ্যাচারির হাঁস-মুরগি উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. নাজমুস সাকিব জানান, দুগ্ধ ও খামারগুলো জোরদারকরণ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের অধীনে সাতক্ষীরায় এ হ্যাচারি স্থাপন করা হয়। এতে আনুমানিক ব্যয় হয় দেড় কোটি টাকা। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো বরাদ্দ না পাওয়ায় হ্যাচারিটি উৎপাদনে যেতে পারেনি। এ অবস্থায় অলস পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে গেছে ৬০ লাখ টাকার ইনকিউবেটর।
তিনি আরো জানান, হ্যাচারি নির্মাণের সময় সঠিকভাবে কাজ করা হয়নি। একতলা তিনটি হ্যাচারি শেড নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী। এরই মধ্যে শেডের দেয়ালের প্লাস্টার খসে পড়ছে। বৃষ্টি হলেই ভেতরে পানি ঢুকছে। নিম্নমানের কাঠ দেয়ায় ভেঙে গেছে দরজার অংশবিশেষ। তাছাড়া নিয়ম মেনে মাটি ভরাট করা হয়নি। রাস্তাও যথেষ্ট প্রশস্ত নয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সাতক্ষীরায় দুই হাজারেরও বেশি পোলট্রি খামার রয়েছে। এসব খামারের খামারিদের কথা চিন্তা করেও দ্রুত এ হ্যাচারি চালু করা প্রয়োজন। এটি চালু হলে খামারিরা সহজে সাশ্রয়ী মূল্যে মুরগির বাচ্চা সংগ্রহ করতে পারবেন।
সাতক্ষীরা জেলা পোলট্রি খামার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মাদ আলী সুজন বলেন, ‘সাতক্ষীরায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় আড়াই হাজার হাঁস-মুরুগির খামার রয়েছে। এসব খামারির কথা চিন্তা করেই ২০১১-১২ অর্থবছরে এ সরকারি হ্যাচারি স্থাপন করা হয়। কিন্তু এরপর গত ছয় বছরেও এটি চালু হয়নি। ফলে পড়ে থেকে সরকারি সম্পদ যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি খামারিরাও বঞ্চিত হচ্ছেন।’
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সমরেশ চন্দ্র দাশ বলেন, ‘সাতক্ষীরার সরকারি মোরগ-মুরগি পালন কেন্দ্রের হ্যাচারি নির্মাণকাজে চরম অবহেলা ও অনিয়ম করা হয়েছে। ফলে কয়েক বছরের মধ্যেই এর শেডগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। চালু না হওয়ায় নষ্ট গেছে বাচ্চা উৎপাদনের ইনকিউবেটর। এ অবস্থায় প্রকল্পের দেড় কোটি টাকাই জলে যেতে বসেছে।’
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ ইফতেখার হোসেন জানান, এ বিষয়ে তিনি অবগত নন। তবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (হাঁস-মুরগি খামার উৎপাদন) মো. মজিবর রহমান জানান, মুরগির বাচ্চার চাহিদা কম থাকায় সাতক্ষীরাসহ কয়েকটি জেলার ছোট হ্যাচারিগুলোয় উৎপাদন আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে শিগগিরই এগুলো চালু করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
কৃপ্র/এম ইসলাম