কৃষি প্রতিক্ষণ ডেস্ক।।
নাটোর জেলায় সোনালী আঁশের দিন ফিরে আসতে শুরু করেছে। বিগত বছরগুলোতে স্বাভাবিক বৃষ্টির কারণে পাট প্রক্রিয়াজাতকরণের সুবিধা এবং পাটের বাজার দরের উদ্ধমুখীর কারণে কৃষকরা পাট চাষে ক্রমশ আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। নাটোরে বেড়েছে পাটের আবাদি জমি এবং উৎপাদনের পরিমাণ। জমিতে সবুজে ভরপুর পাট রাজ্যে চলছে পাট কাটা।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় ১৭ হাজার ২৪০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এরমধ্যে সর্বাধিক পাট আবাদ হয়েছে বড়াইগ্রাম উপজেলায়-পাচ হাজার ৫৪০ হেক্টর, লালপুরে তিন হাজার ৬০০ হেক্টর, গুরুদাসপুরে দুই হাজার ৬৫০, নাটোর সদর উপজেলায় এক হাজার ৭০০ হেক্টর, সিংড়ায় এক হাজার ৬০০ হেক্টর, বাগাতিপাড়ায় এক হাজার ১৮৫ হেক্টর এবং নলডাঙ্গা উপজেলায় ৯৭৫ হেক্টর। এরমধ্যে ৪০ হেক্টর ছাড়া সবটাই তোষা জাতের পাট। বিগত তিন বছর আগে জেলায় পাটের আবাদি জমি ছিল ১৫ হাজার ৮৭০ হেক্টর। চলতি বছরে হেক্টর প্রতি উৎপাদন সাড়ে ১০ বেল ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নাটোর সদর উপজেলার রাজাপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ বদিউজ্জামান বলেন, এবার এলাকায় আশানুরূপ পাট চাষ হয়েছে। গড় উৎপাদন বিঘা প্রতি নয় মণ। এ ব্লকের জাঠিয়ান এলাকার কৃষক শামসুল আলম এবার সাত বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। তিনি জানান, পাট কাটা শুরু হয়েছে। আশাকরি বিঘায় অন্তত নয় মণ পাট পাওয়া যাবে।
নাটোরের প্রসিদ্ধ পাটের হাট গুরুদাসপুরের নাজিরপুর, নাটোর সদরের তেবাড়িয়া এবং সিংড়ার হাতিয়ান্দহ হাটে দেখা যায়, আগাম ওঠা পাট হাটে কেনাবেচা শুরু হয়েছে। হাতিয়ান্দহ হাটে পাট বিক্রি করতে আসা হারিছ ব্যাপারী বলেন, হাটে দুই হাজার টাকা মণ দরে জমির পাট বিক্রি করলাম। দীর্ঘদিন ধরে পাটের ব্যবসায়ী আজিজুল ইসলাম মেম্বর জানান, এবার হাটে পাটের দর ব্যবসায়ী ও কৃষক-উভয়ের জন্যই ভাল হবে।
হাটে পাটের দর আঠারো শত থেকে বাইশ শত টাকা পর্যন্ত। হাটে রমিজুলের আড়তে পাট কিনতে ট্রাক নিয়ে এসেছেন বগুড়ার ব্যবসায়ী আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, পাট কিনে যশোরের নওয়াপাড়ায় পাঠাবো। মূলত নাটোরের উৎপাদিত পাট যায় দক্ষিণ বঙ্গের পাটকলগুলোতে।
নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ বান্ধব বলেই পাটের বহুমুখী ব্যবহার হচ্ছে। এর ফলে দেশে ও বিদেশে পাটের চাহিদা বাড়ছে। বাড়তি মূল্য পাওয়ার কারণে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় পাট চাষে তারাও আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
সুত্র, বাসস/ কৃপ্র/এম ইসলাম