কৃষি প্রতিক্ষন ডেস্ক : পেঁপে একটি অর্থকারী ফসল ।এটা কাঁচা অবস্থায় সবজি হিসেবে এবং পাকলে ফল হিসেবে খাওয়া যায় । দেশে বার মাসই এই ফল পাওয়া যায় । পেঁপের বীজ থেকে চারা তৈরি করা যায়। পলিথিন ব্যাগে চারা তৈরি করলে রোপণের পর চারা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। উপযুক্ত জমি ও মাটি : উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমি ভাল।
জাত পরিচিতি: বারি পেঁপে-১ (শাহী পেঁপে): স্ত্রী ও পুরুষ ফুল আলাদা গাছে ধরে। চারা লাগানোর ৩-৪ মাস পর ফুল আসে। কান্ডের খুব নিচ থেকেই ফল ধরা শুরু হয়। প্রতিটি ফলের ওজন ৮৫০-৯৫০ গ্রাম। চারা লাগানোর ৩-৪ মাস পর ফুল আসে, ফুল আসার ৩-৪ মাস পর পাকা পেঁপে সংগ্রহ করা যায়। এ জাতটি প্রায় সার বছরই ফল দিয়ে থাকে।
চারা রোপণ: দেড় থেকে দুই মাস বয়সের চারা রোপণ করা হয়। ২ মিটার দূরে দূরে চারিদিকে ২ ফুট পরিমান গর্ত তৈরি করে রোপণের ১৫ দিন আগে গর্তের মাটিতে সার মিশাতে হবে। পানি নিকাশের জন্য দুই সারির মাঝখানে ৫০ সে.মি নালা রাখা দরকার। বানিজ্যিকভাবে পেঁপে চাষের জন্য বর্গাকার পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। প্রতি গর্তে ৩ টি করে চার রোপণ করতে হয়। ফুল আসলে ১ টি স্ত্রী গাছ রেখে বাকি গাছ তুলে ফেলা দরকার। পরাগায়ণের সুবিধার জন্য বাগানে ১০% পুরুষ গাছ রাখা দরকার।
সার ব্যবস্থাপনা: প্রতি গাছে ১৫ কেজি জৈব সার, ৫৫০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ৫৫০ গ্রাম টিএসপি সার, ৫৫০ গ্রাম এমওপি সার, ২৫০ গ্রাম জিপসাম সার, ২৫ গ্রাম বোরাক্স সার এবং ২০ গ্রাম জিংক সালফেট সার একত্রে ভালভাবে প্রয়োগ করতে হয়। ইউরিয়া ও এমওপি সার ছাড়া সব সার গর্ত তৈরির সময় প্রয়োগ করতে হবে। চারা লাগানোর পর গাচে নতুন পাতা আসলে ইউরিয়া ও এমওপি সার ৫০ গ্রাম করে প্রতি ১ মাস পর পর প্রয়োগ করতে হয়। গাছে ফুল আসলে এ মাত্রা দ্বিগুণ করা হয়।
অন্তবর্তীকালীন পরিচর্যা: ফুল হতে ফল ধরা নিশ্চিত মনে হলে একটি বোঁটায় একটি ফল রেখে বাকিগুলো ছিড়ে ফেলতে হবে। গাছ যাতে ঝড়ে না ভেঙ্গে যায় তার জন্য বাঁশের খুঁটি দিয়ে গাছ বেঁধে দিতে হয়। সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা: চারা রোপণ এবং সার প্রয়োগের পর প্রয়োজনমতো পানি দিতে হবে। খরা মৌসুমে ১০ থেকে ১৫ দিন পর পর হালকা সেচ দিতে হবে।
পুষ্টি মূল্য: পাকা পেঁপে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ একটি ফল। কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর পরিমানে পেপেইন নামক হজমকারী দ্রব্য থাকে।
ভেষজ গুণ: অজীর্ণ,কৃমি সংক্রমণ, আলসার, ত্বকে ঘা, একজিমা, কিডনি ও পাকস্থলীর ক্যান্সার নিরাময়ে কাজ করে।
ফসল তোলা: সবজি হিসেবে কচি ফল সংগ্রহ করা হয়। পাকানোর জন্য ফলের ত্বক হালকা হলুদ বর্ণ ধারণ করলে সংগ্রহ করতে হয়।